রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রামে প্রথম নির্মিত হচ্ছে বিশ্বমানের বিশেষায়িত ক্যান্সার হাসপাতাল
মোহাম্মদ হাসানঃ বাংলাদেশে প্রতি বছর আনুমানিক দুই লাখ লোক ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার লোক এ রোগে মৃত্যুবরণ করে। শুধু চট্টগ্রামে চার লাখেরও বেশি মানুষ ক্যান্সার আক্রান্ত। প্রতিদিন গড়ে আক্রান্ত হচ্ছেন একশ জন। বছরে চল্লিশ হাজারেরও বেশি নতুন রোগী যুক্ত হচ্ছে এই তালিকায়।
দুরারোগ্য এ ব্যাধি ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্যে ঢাকায় একটি মাত্র বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতাল এবং বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি।
ঢাকার বাইরে মাত্র দু’টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সীমিত আকারে চিকিৎসা দেয়া হয়। এখন পর্যন্ত এই রোগের চিকিৎসা সেবা মূলত ঢাকা কেন্দ্রিক।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল এবং চট্টগ্রাম মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিনই গড়ে অন্তত বহির্বিভাগে দুই শতাধিক ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী সেবা নেয়। কিন্তু এর বাইরে অনেক রোগী অন্তর্বিভাগে শয্যা না পেয়ে এবং বহির্বিভাগে সুযোগ না পেয়ে চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছে। তাছাড়া বর্তমানে চট্টগ্রামে নেই কোনো ক্যান্সার গবেষণা কেন্দ্র।
এরমধ্যে আশাজাগানিয়া খবর হলো ক্যান্সার চিকিৎসায় এমন সংকটময় সময়ে চট্টগ্রাম মা-শিশু হাসপাতালে “সিএমওএসএইচ ক্যান্সার হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউট” নামে বিশ্বমানের একটি ক্যান্সার চিকিৎসা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন।
মা ও শিশু হাসপাতাল ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠান নির্মাণে দেওয়া হয়েছে সরকারি ১০ কাঠা জায়গা। অনুমোদন দিয়েছে পারমাণবিক শক্তি কমিশন এবং পরিবেশ অধিদফতর। ১০তলা প্রস্তাবিত ভবনের নকশার অনুমোদন দিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০তলার ৫৫ হাজার বর্গফুটের আন্তর্জাতিক মানের ক্যান্সার হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউট নির্মাণে প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ। বৃহত্তর চট্টগ্রামের এটিই হবে জনগণের টাকায় জনগণের চিকিৎসার বৃহত্তম কেন্দ্র।
ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এখন অপেক্ষা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের। তবে হাসপাতাল বাস্তবায়ন কমিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের আবেদন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী সময় দিলে এটির ভিত্তিপ্রস্তর করা হবে।
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মোরশেদ হোসেন ও শিশু হাসপাতালের আজীবন সদস্য ফোরামের সদস্য সচিব ম. মাহমুদুর রহমান শাওন ইতিমধ্যে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালে নবনির্মিত ১৪তলা ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর করেছিলেন। হাসপাতালের ১০ হাজার আজীবন সদস্যের প্রাণের দাবি, ক্যান্সার হাসপাতালটিরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন যেন প্রধানমন্ত্রী করেন।