ইউনাইটেড হাসপাতালকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা
ল্যাবে মেয়াদোত্তীর্ণ ক্যামিকেল রাখাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসব ক্যামিকেল ব্যবহারে সঠিক টেস্ট রিপোর্ট পাওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালটির সেবার মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। তবে কর্তৃপক্ষ বলছেন, অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে গুণগত পরিবর্তন আনা হবে।
বুধবার দুপুর বারোটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত যৌথভাবে এই অভিযান চালায়। মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট ব্যবহার, ফ্রিজের তাপমাত্রা ঠিক না রাখায় ক্যামিকেল এর বক্সে পানি জমা, অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ওষুধ কেনা ও মেয়াদোত্তীর্ণ অপারেশন সামগ্রী রাখার প্রমাণ পায় আদালত।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, ‘আমরা এমনও পেয়েছি যে, অনেক কেমিকেল তিন চার বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। দুই থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখার কথা কিন্তু সবগুলো একেবারে বরফ জমে গেছে। এই হাসপাতালে গত কয়েকবছর ধরে যে সাপ্লাই চেইনের মাধ্যমে ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে তারাই নকল এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সাপ্লাই করেছে।’
প্রায় ৫০ শতাংশ ক্যামিকেল আছে যা মাস খানেকের মধ্যে মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে। এ ধরনের ক্যামিকেল দিয়ে তৈরি করা রিপোর্ট শঙ্কায় থাকবে বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিকেল অফিসার দেওয়ান মো. মেহেদী হাসান।
তিনি বলেন, ‘পঞ্চাশ শতাংশ রিএজেন্টের মেয়াদ আছে এই এপ্রিল মাস পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে এগুলো কোনভাবেই শেষ করা সম্ভব নয়। রোগ নির্ণয়ের জন্য এই রিএজেন্ট ব্যবহার করা হয় এবং এটার মেয়াদ যত শেষেরদিকে চলে আসে এর কার্যকারিতা ততই কমে আসে। আর যখন মেয়াদ শেষ হয়ে যায় তখন যে ফলাফলটা আসার কথা সেটা তো আর আসে না।’
এসব অভিযোগ শোনার পর সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ।
সেবা নিতে আসা একজন বলেন, ‘মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ মানে তো বিষ। আমরা তো টাকা দিয়ে এখানে বিষ কিনতে এসেছি।’
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, সেবার মান নিশ্চিত করতে নিয়মিত তদারকি বাড়ানোসহ গুণগত দিক দিয়েও পরিবর্তন আনা হবে।
ইউনাইটেড হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা ডা. সাগুফা আনোয়ার বলেন, ‘আমাদের ভুল-ত্রুটি মাঝে মাঝে হতে পারে। আমাদের নিজেদেরও অভ্যন্তরীণ চেকিং প্রক্রিয়া আছে। সেটা তো চলবেই, আরও সেটাকে জোরদার করা হবে। অবশ্যই এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। উন্নতি করার তো কোন শেষ নাই।’
সব অনিয়মের পরিবর্তনের নির্দেশ দেন র্যাব-এর ভ্রাম্যমান আদালত। ১৫ দিন পর আবারো হাসপাতালের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করা হবে বলেও সতর্ক করা হয়।