চট্টগ্রাম ওয়াসার আয়ের অর্ধেক খরচ বিদ্যুত্ খাতে বার্ষিক আয়ের প্রায় পুরোটাই চলে যাচ্ছে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে
চট্টগ্রাম ওয়াসার আয়ের অধিকাংশই পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যয় হচ্ছে। বিশেষ করে বিদ্যুত্ ও কেমিক্যাল খাতে অস্বাভাবিক ব্যয় বেড়েছে। ওয়াসা বছরে প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ কোটি টাকা আয় করে। এর মধ্যে প্রায় ৬০ কোটি টাকা পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যয় হয়। এর বাইরে রয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা বাবদ খরচ। ফলে আয়-ব্যয় সমন্বয় করে কোনভাবে টিকে আছে প্রতিষ্ঠানটি।
জানা যায়, শুধু বিদ্যুত্ খাতে মাসে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। দু’টি পানি শোধনাগার, রিজার্ভার, পাম্প হাউজ ও বুস্টারে প্রচুর বিদ্যুত্ ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়াও বিপুল পরিমাণ টাকার ডিজেল ব্যবহার হচ্ছে। ওয়াসার ৭০টির মতো পাম্প চালু রয়েছে। বিদ্যুত্ না থাকলে ডিজেল দিয়ে জেনারেটর চালানো হচ্ছে। নলকূপ রক্ষণাবেক্ষণে ও পানি শোধনাগারেও প্রচুর কেমিক্যাল ব্যবহার হচ্ছে। কেমিক্যাল খাতে ব্যয় হচ্ছে বছরে প্রায় ৮ কোটি টাকা। তবে রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ওভারটাইম ও যানবাহন রক্ষণাবেক্ষণ খাতেও অর্থ ব্যয় হচ্ছে অর্থ। ওয়াসায় ওভারটাইম বাবদ মাসে প্রায় ৫০ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। ওয়াসায় পদ রয়েছে ১ হাজার ৪৫টি। আর বর্তমানে কর্মরত জনবল প্রায় ৭০০ জন। ওয়াসায় প্রায় ৭০টি গাড়ি রয়েছে। এসব গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে বছরে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মতো খরচ হয়।
ওয়াসার আয়ের উত্স হচ্ছে পানির বিল, ব্যাংকে এফডিআর ও ব্যক্তি খাতে নলকূপের লাইসেন্স ফি। পানির বিল বাবদ মাসে প্রায় সাড়ে সাত থেকে আট কোটি টাকার বিলিং হয়ে থাকে। সম্প্রতি পানি সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে পানির বিল বাবদ আয় অনেক বেড়েছে। তবে সরকারিসহ কিছু প্রতিষ্ঠানে পানির বিল নিয়মিত পরিশোধ না করায় এবং সিস্টেম লসের নামে পানি অপচয় ও চুরির কারণে বিপুল আয় থেকে ওয়াসা বঞ্চিত হচ্ছে।
জানতে চাইলে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ ইত্তেফাককে বলেন, আমাদের খরচ যেমন বেড়েছে তেমনি আয়ও বেড়েছে। তবে আয়-ব্যয় সমন্বয় করে কোনো রকমে টিকে আছি। আমাদের কয়েকটি প্রজেক্টের কাজ চলমান রয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্টদের বেতন ভাতা প্রজেক্টের টাকায় হচ্ছে। প্রজেক্টের কাজ যখন শেষ হবে তখন আয়-ব্যয়ে কোন অবস্থায় আছি চূড়ান্তভাবে নির্ণয় করা যাবে।