যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বৈঠকের আগে উত্তর কোরিয়ার কিম জং-আন কি চীনে গোপন কূটনৈতিক সফর করছেন?
একজন উচ্চপদস্থ উত্তর কোরিয়ান কর্মকর্তা চীন সফর করছেন বলে সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তিনি আসলে কিম জং-আন।
জাপানের গণমাধ্যম থেকে প্রথম জানানো হয় একটি উত্তর কোরিয়ান কূটনীতিক ট্রেনে উচ্চপদস্থ কোনো কর্মকর্তা বেইজিংয়ে পৌঁছেছে এবং যে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে তারা কর্মকর্তার পরিচয় জানে না, তবে তারা বিষয়টি নজরদারিতে রেখেছে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি মি. কিমের প্রথম আন্তর্জাতিক সফর হতে পারে।
চীন বা উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়া হয়নি। তবে এরকম একটি সফরকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হবে।
গতমাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্র্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মি. কিমের সাথে দেখা করার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। ধারণা করা হচ্ছে এই সাক্ষাৎকে সফল করার উদ্দেশ্যে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তারা।
বিশ্লেষকরা বলছেন উত্তর কোরিয়া ও চীনের নেতারা এই সাক্ষাতের আগে দেখা করতে পারেন। উত্তর কোরিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্যিক সহযোগী চীন।
টোকিও ভিত্তিক নিপ্পন নিউজ নেটওয়ার্ক সবুজ রংয়ের এই ট্রেনটির ভিডিওচিত্র প্রকাশ করে।
সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে বলা হয় ট্রেনটি মি. কিমের বাবার ব্যবহার করা ট্রেনের মত দেখতে। ২০১১ তে কিম জং-আনের বাবা কিম জং-ইল যখন বেইজিং সফর করেন তখন এই ট্রেনটি ব্যবহার করেছিলেন তিনি।
কিম জং-ইল চীন সফর শেষে ফিরে যাওয়ার পর তাঁর সফরের খবর প্রকাশিত হয়।
বেইজিং রেলওয়ে স্টেশনের বাইরে একটি দোকানের ম্যানেজার সোমবার দুপুরে “অস্বাভাবিক” দৃশ্য দেখেছেন বলে জানান তিনি ।
“স্টেশনের বাইরে ও ভেতরে অনেক পুলিশ ছিল। স্টেশন ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল”, এএফপি নিউজ এজেন্সিকে জানান তিনি।
রয়টার্সের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বেইজিংয়ের তিয়ানানমান স্কোয়ার থেকে পুলিশ পর্যটকদের সরিয়ে দিচ্ছিলো যা সেখানকার ‘গ্রেট হল অব পিপল’ এ উচ্চ পর্যায়ের কোনো বৈঠক হলে করা হয়।
বার্তাসংস্থাটি জানিয়েছে পুলিশ প্রহরায় একটি গাড়িবহর ঐ স্থান থেকে চলে যেতে দেখা গেছে।
উত্তর কোরিয়া ও চীনের মধ্যে প্রধান রেলওয়ে যোগাযোগের পথ রয়েছে চীনের সীমান্তবর্তী শহর ড্যানডংয়ে। সেখানেও অস্বাভাবিক দৃশ্য দেখা গেছে বলে বলা হচ্ছে।
তবে দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়োনহাপ নিউজের সাথে কথা বলার সময় বিশ্লেষকরা বলেছেন এই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মি. কিমের ছোট বোন কিম ইয়ো-জং, যিনি সম্প্রতি শীতকালীন অলিম্পিকে দক্ষিণ কোরিয়া সফল করেছেন, তিনিও হতে পারেন।
সেনাবাহিনী কর্মকর্তা চোয়ে রিয়ং-হায়ে’র নামও আসছে সাম্ভাব্য তালিকায়।
সোলের রাষ্ট্রপতির অফিস থেকে একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন “আমরা এখনো নিশ্চিত হইনি বেইজিং সফরে কে গিয়েছেন। আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি।”
উত্তর কোরিয়ার বৈঠকসমূহ
এর আগে মার্চে, উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টেফান লফভেনের সাথে দেখা করেন।
আগামী মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার নেতাদের মধ্যে প্রথমবারের মত ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আগামী মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের সাথে সাক্সাৎ করার কথা রয়েছে কিম জং-আনের।
BBC