প্রাণের ৭১

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সেবায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মেডেল অব ডিসটিংকশনে’ (বিশেষ কৃতিত্ব পদক) ভূষিত করেছে লায়ন্স ক্লাব’স ইন্টারন্যাশনাল।

দরিদ্র, অসহায়, বিশেষ করে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সেবায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মেডেল অব ডিসটিংকশনে’ (বিশেষ কৃতিত্ব পদক) ভূষিত করেছে লায়ন্স ক্লাব’স ইন্টারন্যাশনাল।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল বুধবার সকালে সফররত লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট ড. নরেশ আগরওয়াল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাত্কালে তাঁকে এই পদকে ভূষিত করেন। ড. আগরওয়াল মানবিক গুণাবলি বিশেষ করে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি শেখ হাসিনাকে বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আপনার এই গুণের জন্য এরই মধ্যে আপনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।”

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিপন্ন মানবতার সেবা হচ্ছে আমার দায়িত্ব। আপনারা (লায়ন্স সদস্যরা) সাধারণ মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন, একইভাবে আমরা রাজনীতিবিদরা তাদের খাদ্য, বস্ত্র ও আশ্রয়সহ মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি।’ আগরওয়াল বলেন, তাঁর সংস্থা বাংলাদেশে বিপন্ন মানবতার জন্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের প্রশংসা করে লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট বলেন, এই উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উচ্চ প্রশংসিত হচ্ছে।

লায়ন্স ক্লাব’স ইন্টারন্যাশনালের সাবেক পরিচালক শেখ কবির হোসেন, সাবেক আন্তর্জাতিক পরিচালক এবং ক্লাবের গুডউইল অ্যাম্বাসাডর মোসলেম আলী খান, ক্লাবের বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিচালক কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশের কাউন্সিল চেয়ারপারসন লায়ন্স এম কে বাসার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান : রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ামনারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আবারও আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) আঞ্চলিক প্রধান পুনম ক্ষেত্রপাল সিং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব জানান, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘মানবতার দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ অবশ্যই রাখতে হবে’।” তিনি বলেন, এই সংকট নিরসনে বাংলাদেশ বিশেষ করে মিয়ানমারের সীমান্তসংলগ্ন প্রতিবেশী পাঁচটি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলেছে।

পুনম ক্ষেত্রপাল সিং রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের ভূমিকার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার এ ক্ষেত্রে বিশাল এক কাজ করেছে।’ তিনি টিকাদান ও অন্যান্য চিকিৎসাসেবায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতারও আশ্বাস দেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কন্যা অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান ও স্বাস্থ্যসচিব সিরাজুল হক খান উপস্থিত ছিলেন।

আজকের খুদে ফুটবলাররা আগামীতে বিশ্বকাপ খেলবে : দেশের ফুটবল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরো এগিয়ে যাবে এবং ফুটবল বিশ্বকাপেও বাংলাদেশ একদিন স্থান করে নিতে সক্ষম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোল্ডকাপ এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফুটবল টুর্নামেন্টের মাধ্যমে খুদে খেলোয়াড়রা অল্প বয়স থেকেই তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাচ্ছে। এই খেলোয়াড়রা বাংলাদেশকে আগামীতে বহু দূর নিয়ে যাবে।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আজকের খুদে ফুটবলাররা আগামীতে বিশ্বকাপ খেলবে। সেই দিনের প্রতীক্ষায় থাকলাম।’

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে গতকাল বিকেলে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৭ এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০১৭-এর ফাইনাল খেলার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সূত্র : বাসস।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*