এক বছরের মধ্যে অবৈধ ভবন ভাঙতে হবে বিজিএমইএকে দুই দফায় ১৩ মাস সময় পেয়েও ভাঙা হয়নি
হাতিরঝিলের অবৈধ বহুতল ভবন ভাঙার রায় বাস্তবায়নের জন্য আদালতে মুচলেকা দিয়েছে বিজিএমইএ। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে ভবন ভাঙতে আর কোন সময় চাওয়া হবে না বলেও অঙ্গীকার করা হয়েছে। ওই মুচলেকা গ্রহণ করে ভবনটি ভাঙার জন্য বিজিএমইএকে এক বছরের সময় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ গতকাল সোমবার এই আদেশ দেন। বিজিএমইএর কৌঁসুলির উদ্দেশ্যে আদালত বলেন, যতদিন চেয়েছেন ততদিন দেয়া হয়েছে। এবার রায় বাস্তবায়ন করুন।
বিজিএমইএর ভবন ভাঙতে হাইকোর্টের দেয়া রায় ২০১৬ সালে বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। রায়ে ৯০ দিনের মধ্যে ভবনটি ভাঙার জন্য বিজিএমইএকে বলা হয়। যদি তারা এ সময়ের মধ্যে না ভাঙে তাহলে রাজউক ভবনটি ভেঙে ফেলবে। তবে ভাঙার খরচ বিজিএমইএকে বহন করতে হবে। আপিল বিভাগের এই রায় বাস্তবায়নের জন্য তিন বছর সময় চায় বিজিএমইএ।
২০১৭ সালের ১২ মার্চ আপিল বিভাগ প্রথম দফায় সংগঠনটিকে ছয় মাস সময় দেয়। কিন্তু তারা ভবন ভাঙেনি। এরপর পুনরায় এক বছর সময় চেয়ে আবারো আবেদন দাখিল করে। গত বছরের ৮ অক্টোবর আপিল বিভাগ দ্বিতীয়বার বিজিএমইএকে সাত মাস সময় দেয়। এই আদেশও বাস্তবায়ন করেনি। গত মার্চ মাসে তৃতীয় দফায় এক বছর সময় চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন দাখিল করে। ওই সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ভবন ভাঙার জন্য বিজিএমইএকে মুচলেকা দিতে বলে। এরপর তারা মুচলেকা দেয়। কিন্তু মুচলেকায় সুনির্দিষ্টভাবে ভবন ভাঙার বিষয়টি উল্লেখ না থাকায় তা সংশোধন করে দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। ওই নির্দেশের পরই গতকাল সংশোধিত মুচলেকা দাখিল করে বিজিএমইএর আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী।
এতে বলা হয়, বিজিএমইএ নি:শর্তভাবে অঙ্গীকার করছে যে যদি তাদেরকে এক বছরের সময় দেয়া হয় তাহলে ভবন ভাঙার জন্য ভবিষ্যতে আর কোন সময় চাইবে না। ভবন ভাঙার জন্য সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনাসূমহ অবশ্যই বাস্তবায়ন করবে। যদি তা না করে তাহলে বিজিএমইএ দায়ী থাকবে বলে মুচলেকায় উল্লেখ করা হয়। বিজিএমইএ’র বোর্ড অব ডাইরেক্টরস এর পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এই মুচলেকায় স্বাক্ষর করেন। গতকাল অঙ্গীকারনামা দাখিলের পরই আপিল বিভাগ বিজিএমইএকে এক বছর সময় দেয়। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, মুচলেকা দেওয়ায় ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিলের মধ্যে বিজিএমইএকে ভবনটি ভেঙে ফেলতে হবে।
আদেশের পর বিজিএমইএ’র আইনজীবী ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার আদেশ বাস্তবায়ন করতে ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল পর্যন্ত সময় পেয়েছি।