কারাগারে সালমান খান
আজ বৃহস্পতিবার থেকে যোধপুর সেন্ট্রাল জেলে থাকতে হবে সালমান খানকে। তাঁকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। নেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। কারাগারের অভ্যন্তরে যাতে এই বলিউড তারকার নিরাপত্তা এতটুকু বিঘ্নিত না হয়, সে ব্যাপারে কঠোর খেয়াল রাখছেন কারাগার কর্তৃপক্ষ। এই কারাগারেই নাকি আছেন আরও কয়েকজন সেলিব্রিটি কয়েদি। এরই মধ্যে আজই দায়রা আদালতে সালমান খানের জামিনের আবেদন জানানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁর আইনজীবী। সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি দাবি করেছেন, জামিনের সব কাগজ তৈরি করা হয়েছে। পাঁচ বছরের বেশি জেল হওয়ায় যোধপুর আদালত তাঁকে জামিন দিতে পারবেন। তবে জামিন না পাওয়া পর্যন্ত সালমান খানকে এই কারাগারে থাকতে হবে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রায় ঘোষণার পর সালমান খানকে হাতকড়া পরিয়ে যোধপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে সালমানকে বহনকারী পুলিশের একটি গাড়ি আদালত থেকে কারাগারে প্রবেশ করে। এ সময় চারপাশে ব্যাপক নিরাপত্তা নেওয়া হয়। ওই সময় সেখানে উৎসুক জনতা ভিড় করে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
মুম্বাই থেকে গতকাল বুধবার যোধপুরে এসেছেন সালমান খান। আজ রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির ছিলেন তিনি। রায় ঘোষণার সময় খুবই বিমর্ষ ছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে আছেন দুই বোন আলভিরা খান অগ্নিহোত্রী ও অর্পিতা খান শর্মা। ভাইয়ের মনের জোর বাড়াতে সঙ্গেই আছেন তাঁরা। কিন্তু রায় ঘোষণার পর ভেঙে পড়েন আলভিরা। আদালতের মধ্যেই থমকে দাঁড়িয়ে থাকেন। শুধু তা-ই নয়, কান্নায় ভেঙে পড়েন। অর্পিতা এখনো কোনো মন্তব্য করেননি।
আগেই জানানো হয়েছে সালমান খানকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভারতের রাজস্থান রাজ্যের যোধপুরের একটি আদালত। পাশাপাশি তাঁকে ১০ হাজার রুপি জরিমানা করা হয়েছে। তাঁকে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনের ৫১ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ২০ বছর আগের কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলার রায় হলো আজ বৃহস্পতিবার সকালে। এই মামলায় অন্য তিন অভিযুক্ত সাইফ আলী খান, টাবু ও সোনালী বেন্দ্রেকে আদালত বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
বলিউডে সালমান খানকে বলা হয় ‘হিট মেশিন’। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজস্থানের যোধপুর আদালতে সেই সালমান খানকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড দেওয়ায় থমকে গেছে বলিউড। অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন অনেক চিত্র প্রযোজক। কারণ, এরই মধ্যে এক হাজার কোটি রুপির বেশি লগ্নি করা হয়েছে এই নায়ককে ঘিরে।
এদিকে রায় হওয়ার পর সাংবাদিকদের কাছে সালমান খানের আইনজীবী এইচ এম সারস্বত দাবি করেন, সরকারি কৌঁসুলি অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণ সংগ্রহ করতে পারেননি। মামলা সাজাতে ভুয়া সাক্ষী দাঁড় করিয়েছেন। এমনকি বন্দুকের গুলিতেই যে কৃষ্ণসার দুটির মৃত্যু হয়েছিল, তা-ও সরকারি কৌঁসুলি প্রমাণ করতে পারেননি। গত ২৮ মার্চ নিম্ন আদালতে কৃষ্ণসার মামলার চূড়ান্ত পর্যায়ের শুনানি শেষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের দাবি, ১৯৯৮ সালের ১ ও ২ অক্টোবর যোধপুরে ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবির শুটিংয়ের মাঝে আলাদা আলাদা জায়গায় দুটি কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা করেন সালমান খান। ওই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সাইফ আলী খান, নীলম, টাবু ও সোনালী বেন্দ্রে।
রাজস্থানের যোধপুরের কঙ্কানি এলাকায় গ্রামের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার অধিবাসীদের অভিযোগ, গুলির শব্দ শুনে তাঁরা সালমানের জিপসি গাড়িটি ধাওয়া করেন। কিন্তু তাঁদের ধরা যায়নি। ওই সময় চালকের আসনে ছিলেন সালমান খান। গ্রামবাসীর দাবি, প্রবল গতিতে গাড়ি ছুটিয়ে সালমান খান আর তাঁর সঙ্গীরা পালিয়ে যান।
বেআইনিভাবে জঙ্গলে ঢোকার অভিযোগে সালমান খান আর অন্য তিন তারকার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৯ নম্বর ধারায় মামলা এখনো চলছে।