৩ বছর ধরে মৃত মায়ের দেহ সংরক্ষন, আটক বাবা,ছেলে।
তিনবছর আগে মৃত মায়ের দেহ রাসায়নিক দিয়ে সংরক্ষণ করে এতদিন আগলে রেখেছিলেন ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে বেহালার ঘোলসাপুরের জেমস লং সরণিতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুলিশ খবর পেয়ে বুধবার রাতেই বেহালা থানার পুলিশ ওই দেহটি উদ্ধার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৩ বছর ধরে মৃত মাকে ফ্রিজে মমি করে রেখে দিয়েছিল ছেলে। মৃতদেহের গায়ে ফর্ম্যালডিহাইড মাখানো, পেট থেকে নাড়িভুঁড়ি বার করা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জানা গেছে, শুভব্রত মজুমদার (৫০) একসময় খুবই মেধাবী ছাত্র ছিলেন। পড়াশোনা করেছেন লেদার টেকনোলজি নিয়ে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, আগে বানতলার চর্মনগরীর একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করলেও তা ছেড়ে দেন শুভব্রত। তারপর থেকে বিশেষ কিছু করতেন না তিনি, ভবঘুরে স্বভাবের ছিলেন। থাকতেন মা বীণা মজুমদার ও বাবা গোপাল মজুমদারের সঙ্গে। প্রতিবেশীদের কথায়, ২০১৫ সালে শুভব্রতর মায়ের মৃত্যু হয় কোনও এক হাসপাতালে। তিনি প্রতিবেশীদের বলেন, দেহ পিস হাভেনে রাখা হয়েছে। কিন্তু কোনও সৎকার বা দেহ বাড়িতে আনা তার কোনও কিছুই প্রতিবেশীদের নজরে আসেনি। এরপর থেকেই ছেলে শুভব্রতর স্বভাব রহস্যজনক হয়ে যায়।
বুধবার বেহালা পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রাতেই শুভব্রতর বাড়িতে হানা দেয়। দেখা যায়, বাড়িতে রয়েছে আইসক্রিম রাখার মত বড় একটি ফ্রিজ, তার মধ্যে কার্যত মমি করে রাখা বীণা দেবীর দেহ। সংরক্ষণে যাতে অসুবিধে না হয়, তাই রীতিমত বিশেষজ্ঞের ধাঁচে শুভব্রত মায়ের পেট থেকে নাড়িভুঁড়ি বার করে নেন বলে অভিযোগ। তারপর রাসায়নিক মাখিয়ে দেহটি রেখে দেন ফ্রিজে। ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে রাসায়নিকও।
প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ৮৯ বছরের বৃদ্ধ গোপালবাবু ছেলের কীর্তির কথা জানতেন। বীণা দেবী সরকারি চাকুরে ছিলেন, তাঁর পেনশন পাওয়ার জন্য এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তাদের দাবি। গোপালবাবুর কাছে স্ত্রীর ডেথ সার্টিফিকেট দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাননি বলে অভিযোগ। বেহালা পুলিশ এই ঘটনায় ছেলে শুভব্রতকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তার বাবাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।