প্রাণের ৭১

শুয়োরের সাথে সহবাস ও শিবিরের নেতৃত্ব মেনে নেওয়া ।-কাজী নজরুল। ফ্রিল্যান্স লেখক ও এক্টিভিস্ট

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাথে শিবিরের নেতৃত্বের যখন প্রকাশ্যে আসছে তখন অনেকে প্রশ্ন তুলছে ‘ একটা ন্যায্য আন্দোলনের সাথে যদি শিবির থাকে তাহলে তা কি অপরাধ নাকি’? এই ধরনের প্রশ্ন তুলছে।

তাদেরকে বলি কোটা সংস্কার আন্দোলনটা একবাক্যে সবাই স্বীকার করছে সংস্কার হওয়া জরুরী। প্রধানমন্ত্রীর পটিয়া জনসভার পরে স্থীমিত হাওয়ার পর,  আন্দোলনটা হঠাৎ করে আবার ফিরে আসা, মধ্যরাতে ছাত্র নিহতের গুজব ( সেই একই স্টাইল একই ধারা, একই প্যাটার্ন যা জামাত নেতা সায়দীর রায়ের পর দেখা গিয়েছিলো) ছড়িয়ে  হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে মধ্যরাতে রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়া। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে লাশ ফেলে দেওয়ার চেষ্টা, ভিসির বাসভবনে হামলা করা, পরদিন সরকারের শীর্ষ মহলের সাথে বসার পরও আন্দোলন অব্যাহত রাখা, ভিসির বাসভবনে হামলাকারীদের মতিয়া রাজাকারের বাচ্ছা বলায় তার খন্ডিতাংশ প্রচার ( এটাও আবার জামাতি প্যাটার্ন) ছাত্রদের ক্ষেপিয়ে তোলা, ছাত্রলীগ সাধারণ ছাত্রীর রগ কেটেছে বলে মিথ্যাচার করে গুজব রটানো। কোটা নিয়ে সবচেয়ে বেশী মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কথা বলা, কটাক্ষ করা (কারা বলতে ও কটাক্ষ করতে পারে তা নিচ্ছয় বলে দিতে হবেনা?) ভিসির বাসভবনে হামলা ও গুজব রটনাকারীদের অনুপ্রবেশকারী বলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিতে বলে এখন যখন গোয়েন্দা সংস্থা ওদের চিহ্নিত করার পরে মামলা দিচ্ছে তখন সেই মামলা প্রত্যাহারের কথা বলছে অন্যথায় আন্দোলনে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এতসব গুজব কোন প্রগতিশীল আন্দোলনের সাথে যায় কিনা নিজেদের প্রশ্ন করা উচিৎ সাধারন ছাত্রদের।

সু-দীর্ঘ সময় জামাত-বিএনপি সরকার বিরোধী আন্দোলন জমানোর চেষ্টা করেও তা পারেনি। তারা কি করে এমন একটা আন্দোলনের ভিতরে ঢুকে ( যা তারেক জিয়ার কথপোকথনেও প্রকাশ্য) এই আন্দোলনকে সরকার বিরোধীতায় রুপ দিয়ে তা সরকার হটানোয় চেষ্টা করবেনা এমন ভাবাটা বেকুবি। আর এই কাজটা নিচ্ছই জামাত-বিএনপির বুড়া নেতারা করবেনা? অবশ্যই তাদের ছাত্র সংঘঠন এই কাজে উপযুক্ত সেটা নিচ্ছই বলে দিতে হবেনা! আর তাই সাধারণ ছাত্রদের সেন্টিমেন্ট কাজে লাগিয়ে তা থেকে তাদের পায়দা লুটবে এটাইতো স্বাভাবিক। আর সেটাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়াটা নিচ্ছই সরকার ও তদের সমর্থকদের দোষ নয়। বরং সাধারন ছাত্রদেরে কারো কলকাঠির গুটি হাওয়া থেকে বাচানো কর্তব্য। ঢাবিতে প্রকাশ্যে শিবির রাজনীতি করতে পারেনা। কিন্তু তাদের চিহ্নিত করার নিচ্ছই কিছু সহজ পন্থা আছে। তাই বাশেরকেল্লা ফেজের পোষ্ট শেয়ার দেওয়া, যুদ্ধাপরাধ বিচারের বিরোধীতা করে নারীদের নিয়ে অবমাননাকর পোষ্ট দেওয়া লোকদের যদি আপনাদের নির্দোশ মনেহয় তাহলে বলতে হবে- ক্রিম খোরেরা সব কালেই ছিল। সবাই মুক্তিযোদ্ধা বা রাজাকার না হলেও তাদের ফলোয়ার – ফ্রেন্ড সবকালেই ছিলো।  শুয়োরের সাথে সহবাস করতে কারো কারো দ্বিধা নাই থাকতে পারে!

জামাত মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীতাকে জাষ্টিফাই করার জন্য বলে যে, তারা সে সময় রাজনৈতিক কারনে অবিভক্ত পাকিস্থানের দাবিতে সে সময় মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছিলো। যা কোনভাবেই ভুল ছিলোনা। ইতিহাস স্বাক্ষি যে, তারা ভুল ছিলো। শুধু ভুল নয়, বিরোধীতা করতে গিয়ে তারা স্বজাতির বিরুদ্ধে অশ্র ধরে রক্ত পিপাশু হয়েছিলো। নিজেদের মা-বোনদের গনিমতের মাল বলে নরপশুদের হাতে তুলে দিয়েছিলো সাথে নিজেরাও নির্যাতন করেছিলো। আজো তারা তাদের সে পাপকে দম্ভভরে বলে তারা ‘ভুল করেনি’।

আর আজকে আপনারা একটা ন্যায্য আন্দোলনে শিবিরের নেতৃত্ব মেনে নিয়ে একই কাজটা ভিন্নভাবে করছেন।

সর্বশেষ একটা প্রশ্নরেখে শেষ করছি কোটা আন্দোলনে যদি অনুপ্রবেশকারী (ভিসির বাসভবনে হামলাকারীদের তোমরাই বলেছো ) ঢুকতে পারে, তাহলে ছাত্রলীগে কেনো নয়?






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*