মহাভারত যুগে ভারতে ইন্টারনেট ছিল – ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব দাবি করেছেন, হাজার বছর আগে থেকেই প্রাচীন ভারতের হিন্দুরা ইন্টারনেট আবিষ্কার করেছেন। রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রীর এমন দাবি খোদ দেশটির জনগণের মধ্যেই ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের জন্ম দিয়েছে।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে ইন্টারনেট আবিষ্কার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ওই মন্তব্য করেন। প্রাচীন ভারতীয় হিন্দু উদ্ভাবকরা যে ইন্টারনেট আবিষ্কার করেছেন— এমন দাবি প্রমাণে বিপ্লব মহাভারত থেকে একটি উদাহরণ টানেন।
বিপ্লব বলেন, মহাভারতে থাকা কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের বিবরণ প্রমাণ করে, প্রাচীন ভারতে শুধু ইন্টারনেটই নয়, স্যাটেলাইট প্রযুক্তিও ছিল। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ওই দাবি অনেকেই গ্রহণ করেননি। এ নিয়ে যোগাযোগের সামাজিক মাধ্যমে ঠাট্টা-উপহাস করছেন অনেক ভারতীয়।
একজন টুইটারে ঠাট্টা করে লিখেছেন, তাঁর মনে হয়, এখনকার চেয়ে বরং সেই আমলেই ইন্টারনেটের গতি বেশি ছিল। ইন্টারনেট নিয়ে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর দাবিকে ‘দুঃখজনক’ বলেও মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিজেপির মন্ত্রী-সাংসদ-নেতাদের ‘অদ্ভুত’ সব মন্তব্যের ঘটনা নতুন নয়।
ইন্টারনেট আবিষ্কারের ইতিহাস:
ইন্টারনেট সম্পর্কে সাধারণ মানুষ জানতে পারে যখন অধ্যাপক লিওনার্ড ক্রাইনরক তার গবেষণাগার ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেস (ইউসিএলএ) থেকে অর্পানেটের মাধ্যমে একটি বার্তা স্ট্যানফোর্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআরআই) তে পাঠান। ১৯৬০ সালের শেষে ও ১৯৭০ সালের প্রথম দিকে প্যাকেট সুইচিং নেটওয়ার্কসহ বিভিন্ন প্রোটোকল ব্যবহার করে একে আরও উন্নত করা হয়।
অর্পানেটের অ্যাক্সেসের জন্য ১৯৮১ সালে একে সম্প্রসারিত করা হয়। ১৯৮৬ সালে একে সুপার কম্পিউটার সাইটগুলোতে সংযুক্ত হওয়ার সুযোগ দেয়। ১৯৮০ সালের শেষের দিকে এবং ১৯৯০ সালের শুরুর দিকে বাণিজ্যিক ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীরা (আইএসপির) আবির্ভাব হতে থাকে। ১৯৯০ সালের মাঝামাঝি থেকে, ইন্টারনেট সংস্কৃতিতে ও বাণিজ্যে এবং ইলেকট্রনিক মেইল, ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং, ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল (ভিওআইপি) “ফোন কল”, দ্বি-মুখি ইন্টারেক্টিভ ভিডিও কল এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবসহ ইন্টারনেট ফোরাম, ব্লগ, সামাজিক নেটওয়ার্কিং পরিষেবা এবং অনলাইনে কেনাকাটার ওয়েব সাইটসমূহে একটি বিপ্লবী প্রভাব বিস্তার করে।