মানব মুক্তির সংগ্রামে অন্যতম পথ প্রদর্শক মহামতি কার্ল মার্কস।
মানব মুক্তির সংগ্রামে অন্যতম পথ প্রদর্শক মহামতি কার্ল মার্কস। তিনি দর্শন, অর্থ শাস্ত্র এবং সামাজিক বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিপ্লবী চিন্তার প্রয়োগ ঘটানোর পাশাপাশি সমাজ প্রগতির সংগ্রামকে দিয়েছেন বিপ্লবী পথ নির্দেশনা। দর্শনের জটিল জগতকে তিনি মানুষের বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের উপযোগী করে গড়ে তুলেছিলেন। শ্রমিক শ্রেণির লড়াইকে অগ্রসর করে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকল মানুষের মুক্তির যে দিশা দেখিয়েছেন কার্ল মার্কস, আজও তা দুনিয়ার মুক্তিকামী মানুষকে লড়াইয়ের দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে।
মহামতি কার্ল মার্কসের দ্বিশততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সিপিবি-বাসদ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম একথা বলেন। আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর বি এম এ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওই সভায় বক্তৃতা করেন বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবির উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য মনজুরুল আহসান খান, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন ও বজলুর রশীদ ফিরোজ।
সভার শুরুতে সঙ্গীত পরিবেশন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী এবং চারণ সাংস্কৃতি কেন্দ্রের শিল্পীরা। কার্ল মার্কসের সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করেন সিপিবি’র কেন্দ্রীয় নেতা মো. কিবরিয়া। সভা শেষে রণেশ দাশগুপ্ত চলচ্চিত্র সংসদের উদ্যোগে ‘মুক্তি মশাল’ শীর্ষক একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। সভার শুরুতে বায়তুল মোকাররম মার্কেটের সামনে সিটি কর্পোরেশনের উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে বুলডোজারে নিহত হকার নেতা জামাল হোসেনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
সভায় মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আরো বলেন, মার্কস মেহনতি মানুষের সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি শ্রেণিবিভক্ত সমাজে শ্রমিক শ্রেণির হাতে তাদের মতাদর্শিক হাতিয়ার তুলে দিয়েছেন। প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার বিশ্লেষণ, বিপ্লবী তত্ত্ব নির্মাণ, দর্শনকে মানুষের জন্য কাজে লাগানোর মধ্য দিয়ে মার্কস দুনিয়ার একজন শ্রেষ্ঠ চিন্তক ও দার্শনিক হিসেবে সর্বমহলে স্বীকৃত হয়েছেন।
খালেকুজ্জামান বলেন, কার্ল মার্কস তার জন্মের দুই শ বছর পরেও ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক। পুঁজিবাদ যখন মুক্তবাজার অর্থনীতি, উদারনীতিবাদ, বিশ্বায়নের নামে নতুন নতুন চেহারায় শোষণ চালিয়ে যাচ্ছে, সে সময় কার্ল মার্কস আরো প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছেন। কার্ল মার্কসের বিপ্লবী জীবন ও তার দেখানো পথ থেকে শিক্ষা নিয়ে শোষণহীন ‘মুক্ত মানুষের মুক্ত সমাজ’ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে অগ্রসর করতে হবে।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, কার্ল মার্কসের শিক্ষা থেকেই বাংলাদেশের মেহনতি মানুষের মুক্তির পথ খুঁজতে হবে। বিদ্যমান সমাজ ব্যবস্থা বদলাতে গেলে ও পুঁজিবাদকে বুঝতে হলে মার্কসকে পড়তে হবে। বিশ্ব পুঁজিবাদকে পরাজিত করতে দুনিয়ার সকল মানুষকে এক হতে হবে।