ড. জাফর ইকবালের হস্তক্ষেপেই সেই সন্দেহজনক যুবককে ছেড়ে দিল পুলিশ
সিলেটে শাহ জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালের হস্তক্ষেপেই ছাড়া পেয়েছেন সন্দেহজনক আচরণের কারণে পুলিশের হাতে আটক সিলেটের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম।
সোমবার (৭ মে) দুপুরে শাবি ক্যাম্পাসের এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের কক্ষ থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার (৮ মে) সকালে তাকে ছেড়ে দেয় জালালাবাদ থানা পুলিশ। জাফর ইকবাল নিজে থানায় এসে তাকে ছাড়ার জন্য সুপারিশ করেন।
ছাড়া পেয়ে মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিবুল বলেন, জাফর স্যারের কক্ষে একটা ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছিল। আমি স্যারের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।
নিজের মুক্তি সম্পর্কে রাকিবুল বলেন, স্যার নিজে থানায় এসে আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। পরে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আমার মুক্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
নিজের ‘ভুল’ স্বীকার করে রাকিবুল বলেন, ভুলটা আমারই ছিল। স্যার অনেক বড় মাপের মানুষ, আমি ঘটনার জন্য স্যারের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। স্যার যেন আমার জন্য দোয়া করেন। উনি ভালো থাকুন, এটাই আমার চাওয়া। উনাদের মতো মানুষ দেশের দরকার।
এর আগে, মঙ্গলবার দুপুরে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদের পর তেমন কিছু না পেয়ে ওই শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, সোমবার দুপুরে নিজের কক্ষে অবস্থান করছিলেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। এসময় তাঁর কক্ষে প্রবেশ করে এক তরুণ। জাফর ইকবালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের কাছে নিজেকে শাবিপ্রবির ছাত্র পরিচয় দিয়ে দোয়া নিতে স্যারের কাছে এসেছে বলে জানায়। রাকিব জাফর ইকবালের কক্ষে প্রবেশের একটু পরেই জোহরের আযান হয়। এ সময় তিনি জাফর ইকবালকে প্রশ্ন করেন- ‘স্যার, আপনি নামাজ পড়েন কী?’
এমন প্রশ্নে সন্দেহ হয় সম্প্রতি এক তরুণের ছুরিকাঘাতের শিকার হওয়া অধ্যাপক জাফর ইকবালের। কথপোকথন শেষে তাঁর নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের এ বিষয়ে অবগত করেন তিনি। তখন পুলিশ সদস্যরা রাকিবকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তার কথাবার্তা সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে জালালাবাদ থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
গত ৩ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে একটি অনুষ্ঠান চলাকালে ফয়জুর রহমান নামে এক তরুণ ড. জাফর ইকবালের ওপর ছুরি নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় গুরুতর আহত হন তিনি। পরবর্তীতে দীর্ঘ দুই মাস চিকিৎসা শেষে গত ২ এপ্রিল কর্মস্থলে যোগদান করেন জাফর ইকবাল। ওই হামলার পর থেকে জাফর ইকবালের নিরাপত্তায় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।