চাটাইয়ে মুড়িয়ে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার!
দেশ-মাতৃকাকে শত্রুমুক্ত করতে যুদ্ধ করেছিলেন তিনি। জাতির সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানকে গার্ড অব অনার দেওয়া হলো ঠিকই। কিন্তু তার মরদেহ মোড়ানো হয়নি সেই পতাকায়, যার জন্যে জীবনবাজি রেখে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন।
ঘটনাটি ঘটেছে পাবনার বেড়া উপজেলায়। গত ১৮ মে মুক্তিযোদ্ধা তাহেজ উদ্দিন সরকার মৃত্যুবরণ করেন। পরদিন বাদ জোহর তাকে দাফন করা হয়। ছবিতে দেখা যায়, চাটাইয়ে মুড়িয়ে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হচ্ছে। সম্ভুপুরা গ্রামে তার নামাজের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। কিন্তু জাতীয় পতাকার আচ্ছাদন দেওয়া হয়নি তার দেহে।
এদিকে, সংশ্লিষ্টদের এমন দায়িত্বহীনতা নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে ভুল স্বীকার করেছে প্রশাসন। একে তারা অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল বলে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়রা একে শুধু অবহেলা বা গাফিলতি বলতে রাজি নন। তারা একে অন্যায় বলে মনে করছেন। দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন।
এ প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, কর্তব্যে অবহেলা এবং গাফিলতির প্রমাণ মিললে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রশাসন জানায়, ওই মুক্তিযোদ্ধাকে যথাযথ মর্যাদায় দাফনের কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন সাবেক উপজেলা কমান্ডার। সাবেক উপজেলা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা তাহেজ উদ্দিন সরকার একে অনাকাঙ্খিত ও অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। গার্ড অব অনার দেয়া হয়েছে। কিন্তু ভুলক্রমে জাতীয় পতাকা আনা হয়নি। একদম শেষ মুহূর্তে বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। কিন্তু ততক্ষণে তীব্র রোদে লাশ প্রায় ফুলে উঠেছিল। তাই পতাকার জন্য অপেক্ষা না করে চাটাই দিয়েই গার্ড অব অনার দেয়া হয়।
পাবনার বেড়া উপজেলার এসি (ল্যান্ড) মাহবুব হাসান তার বক্তব্যে বলেন, প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার গার্ড অব অনারসহ যাবতীয় প্রস্তুতির দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা কমান্ডার। কিন্তু জানাযার ঠিক আগ মুহূর্তে বিষয়টি আমার নজরে আসে। সঙ্গে সঙ্গে আমি কমান্ডারের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাই। কিন্তু তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।