বাংলাদেশ ও ফ্রান্স পার্লামেন্ট বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একত্রে কাজ করতে পারে : স্পিকার
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ফ্রান্স দীর্ঘদিনের বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স পার্লামেন্ট বিভিন্ন স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একত্রে কাজ করতে পারে।
তিনি বৃহস্পতিবার প্যারিসে ফ্রান্সের ন্যাশনাল এসেম্বলি’র ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাডাম ক্যারোল ব্যুরো বোননার্ড এর সাথে সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন। আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ন্যাশনাল এসেম্বলিতে পৌঁছালে ক্যারোল ব্যুরো বোননার্ড তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান হয়।
এ সময় তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকেই ফ্রান্সের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বের সূচনা। এ বন্ধুত্ব ভবিষ্যতে আরো জোরদার হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। দুই দেশের জাতীয় সংসদ বিভিন্ন স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একত্রে কাজ করার বিষয়টি আলোচনায় প্রাধান্য পায়।
সাক্ষাৎকালে তারা সংসদীয় চর্চা ও রীতিনীতি, নারীর ক্ষমতায়ন ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যসহ দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করেন।
স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান এখন সুদৃঢ়। নারী ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে অনন্য দৃষ্টান্ত। এছাড়া গত দশ বছরে দারিদ্র্য হার ৪০% থেকে কমে এখন ২৩%। রাজনীতিসহ অন্যান্য পেশায় নারীদের সম্পৃক্ততা আজ দৃশ্যমান। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশের পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। এ উন্নয়ন ধারায় ২০২১ সালে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে।
ক্যারোল ব্যুরো বোননার্ড সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকে উন্নয়ন হওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। তিনি নারীর ক্ষমতায়নে সফল পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান।
উভয় দেশের পার্লামেন্টের সফর বিনিময়ের উপর গুরুত্বারোপ করে স্পিকার বলেন, এ ধরনের সফর উভয় দেশের জন্য শিক্ষণীয়।
এ সময় তিনি ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ফ্রান্স-বাংলাদেশ মৈত্রী গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল অবনোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
এর আগে সকালে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গবেষক ড. মং জারনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সাথে পালম্যান হোটেলে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে তারা রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
স্পিকার বলেন, বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গাদের অধিকার সংরক্ষণ করে শান্তিপূর্ণভাবে স্থায়ী প্রত্যাবাসন। রোহিঙ্গাদের মানবিক বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করতে মিয়ানমারকেও আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসতে হবে।
ড. মং জারনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় প্রদান করে বাংলাদেশ এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এ সময় তিনি রোহিঙ্গা, রাখাইন স্টেট প্রভৃতি বিষয়ে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করেন। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তিনি সমন্বিতভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একত্রিত করে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। রোহিঙ্গা, রাখাইন স্টেট সম্পর্কে ঐতিহাসিক পটভূমি ব্যাখ্যা করায় স্পিকার মং জারনিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সাগুফতা ইয়াসমিন এমপি ও ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন।
বাসস