হত্যার দায় স্বীকার করে তিন জনের জবানবন্দি
চট্টগ্রাম নগরীতে ব্যাংক কর্মকর্তাকে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আল ইমরান খানের আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক (চট্টগ্রাম মেট্রো) সুদীপ কুমার দাশ বলেন, তিন আসামি হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দিতে পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদালত কিশোর বয়েসী হওয়ায় এদের মধ্যে দুজনকে সংশোধনাগারে এবং আরেকজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ২৭ মে সকাল ১১ টার দিকে নগরীর বন্দর থানার মধ্যম হালিশহর এলাকায় নিজ বাসা থেকে ব্যাংক কর্মকর্তা সজল নন্দীর (৪৮) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় সজলের বড় ভাই বাদি হয়ে বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সজল নগরীর সল্টগোলা এলাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক শাখায় ক্যাশিয়ার পদে কর্মরত ছিলেন।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার ভোরে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা হল- নগরীর একটি স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র প্রতীক মজুমদার (১৬), সদ্য এসএসসি পাশ করা জিকু বড়ুয়া (১৭) এবং এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জয় বড়ুয়া চৌধুরী (১৯)।
পিবিআই জানায়, সজলের ছেলে সৈকত নন্দী এবং প্রতীক মজুমদার একই স্কুলে পড়ার সুবাদে ঘনিষ্ঠ বন্ধু। অপর দুজন প্রতীকের বন্ধু।
তিনজন জবানবন্দিতে জানায়, ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাসা থেকে সজলের স্ত্রী রুমা নন্দী কর্মস্থলের উদ্দেশে বেরিয়ে যাওয়ার পর প্রতীক, জয় ও জিকু ওই বাসায় যায়। এ সময় তারা সৈকতের সাইকেল কেনার কথা বললে সজল বিশ্বাস করে তাদের বাসায় প্রবেশ করতে দেন। যদিও সৈকত বাসায় ছিল না।
এ পর্যায়ে সাইকেলের বিষয় নিয়ে পরিকল্পিতভাবে তারা সজলের সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু করে। তখন জিকু সজলের মাথায় তালা দিয়ে আঘাত করে। সজল চিত্কার দেয়। এসময় প্রতীক তার মুখ চেপে ধরে। জিকু ও জয় মিলে গামছা দিয়ে সজলের পা বেঁধে ফেলে। এরপর জয় ছোরা দিয়ে সজলকে গলা কেটে হত্যা করে।
সজল নন্দী বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী ছিলেন। তাদের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার জৈষ্ঠ্যপুরা গ্রামে।