ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এখনো পছন্দ করেন তার সমর্থকরা
বিশ্ব রাজনীতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচকের অভাব না থাকলেও ট্রাম্প সমর্থকদের তাঁর কূটনৈতিক কৌশলের ওপর অবিচল আস্থা রয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করার পেছনে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া রাজ্যের ভোটাররা। এই রাজ্যে রিপাবলিকানরা বেশ শক্তিশালী, আর ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তাও দেখার মতো।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মি. ট্রাম্পের নানা ধরণের অদ্ভূত কার্যকলাপ বা বিতর্কিত সিদ্ধান্তে তাঁর দেশের ভেতরে ও বাইরে নানা ধরনের সমালোচনা তৈরী হলেও পেনসিলভানিয়ায় ট্রাম্পের কট্টর সমর্থকরা কিন্তু তার কাজকর্মকে যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত বলেই মনে করেন।
যেমনটি বলছিলেন পেনসিলভানিয়ার একটি স্টেডিয়ামে বেসবল ম্যাচ দেখতে আসা সুজান। সুজানের মতে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার স্বার্থকে সবার ওপর প্রাধান্য দেন।
সুজান বলেন, ‘আমার মনে হয় মি. ট্রাম্প আমেরিকার স্বার্থকে সবসময়ে সবার ওপরে রাখেন। এইজন্যই আমি তাকে সমর্থন করি।’
সুজানের মতে মি. ট্রাম্প অধিকাংশ সময়ই দারুণ পেশাদার আচরণ করেন। আর তাঁর অপ্রত্যাশিত মন্তব্যগুলোকেও মি. ট্রাম্পের কূটনৈতিক কৌশলের একট অংশ হিসেবেই মনে করেন তিনি।
‘মাঝেমধ্যে তিনি অপ্রত্যাশিত কিছু মন্তব্য করেন ও তাঁর কঠিন চরিত্রটি বের হয়ে আসে। তবে অনেকসময় এটি আমোদপূর্ণও হয়। তিনি কখন কি বলবেন সেসম্পর্কে ধারণা করা যায় না, আর আমার মনে হয় এটি তার অন্যতম প্রধান শক্তি।’
ইরান পরমাণূ চুক্তি ও প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের সরিয়ে নেয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার ব্যাপক মুখে পড়ে ট্রাম্প প্রশাসন।
কিন্তু এসব সিদ্ধান্ত নেয়ায় সমর্থকদের চোখে তাঁর ভাবমূর্তি একটুও ক্ষুন্ন হয়নি। বরং ট্রাম্প সমর্থকদের মতে ইরান পরমাণূ চুক্তি থেকে সরে আসা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত ছিল।
ট্রাম্প সমর্থকরা মনে করেন, পরমাণূ চুক্তির শর্ত ইরান কর্তৃপক্ষ মেনে চলছিল কিনা তা বিশ্বাসযোগ্যভাবে যাচাই করা সম্ভব ছিল না। কাজেই এই চুক্তি থেকে সরে আসাই সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সম্প্রতি অ্যালুমিনিয়াম আর স্টিল আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যেই সিদ্ধান্তকে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলো বেআইনি বলে অভিহিত করেছে। অনেকের মতেই এমন সিদ্ধান্তের কারণে পুরো বিশ্বের বাণিজ্য পরিস্থিতিতে অস্থিরতা তৈরী হতে পারে।
তবে ট্রাম্প সমর্থকরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন । কারণ এর ফলে আমেরিকার ভেতরের অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিল কারখানায় কর্মসংস্থান টিকে থাকবে।
প্রাথমিকভাবে অ্যালুমিনিয়াম আর স্টিলের দাম বাড়লেও আমেরিকার ভবিষ্যতের জন্য এ সিদ্ধান্ত ভাল বলেই মনে করেন ট্রাম্প সমর্থকরা।
আর প্রেসিডেন্টের এধরণের সিদ্ধান্তের কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অ্যামেরিকা বন্ধুহীন হয়ে যাবে, এমন মতবাদকেও উড়িয়ে দেন ট্রাম্প সমর্থকরা।
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিমের সাথে হতে যাওয়া বৈঠকও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লাভজনক হবে বলেই বিশ্বাস ট্রাম্প সমর্থকদের।
বেসবল খেলায় বলা হয়ে থাকে যে মানসিকতাই সর্বপ্রধান অস্ত্র। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরাও তাঁদের প্রেসিডেন্টের আগ্রাসী মনোভাব ও বেপরোয়া কথাবার্তার কারণেই তাঁর স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র নীতির ওপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখেন।
সূত্র: বিবিসি