চাঁদপুরে মা হত্যার বিচার দাবি করে মেয়েদের সাংবাদিক সম্মেলন
চাঁদপুরে মা হত্যার বিচার দাবি করে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন নিহত মহিলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যক্ষ শাহীন সুলতানার মেয়েরা। রবিবার দুপুরে চাঁদপুর প্রেস ক্লাবে এই সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, নিহতের ছোট মেয়ে ডা. ফাতিমা শাহীন পুষ্প। এ সময় তাঁর বড় বোন ফারজানা শাহীন পদ্মসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে ডা. পুষ্প বলেন, পারিবারিক বিরোধের জের ধরেই তাঁর বাবা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম ও সৎ মা জুলেখা শাহীন সুলাতানাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে চাঁদপুরের রাজনৈতিক দল, আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নিরব ভূমিকা পালন করায় সংবাদিক সম্মেলনে নিন্দা জানান তিনি। ডা. পুষ্প কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, নির্মম এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে আজ যারা নিরব। একদিন তাদেরকেও বিবেকের কাছে জবাব দিতে হবে। তাই মা হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সরকার এবং সমাজের সবার কাছে আকুতি জানান তিনি।
প্রসঙ্গে, গত ৪ জুন রাতে চাঁদপুর শহরের ষোলঘর এলাকায় নিজ বাসায় খুন হন শাহীন সুলতানা। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তাঁর স্বামী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম ও দ্বিতীয় স্ত্রী জুলেখা বেগম গ্রেপ্তার হন। এদের মধ্যে অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম জেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি। অন্যদিকে, তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী জুলেখা বেগম এনজিও কর্মী। ঘটনার শিকার শাহীন সুলতানা ছিলেন, চাঁদপুরে মহিলা আওয়ামী লীগ জেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভানেত্রী ও কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য। এ ছাড়া জেলার ফরিদগঞ্জ গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন তিনি।
পরে নিহতের ভাই ফোরকান উদ্দিন খান বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের হাতে রয়েছে। ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তবে আসামিদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য এখনো বের করতে পারেনি তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে, এই মামলায় অপর দুই আসামি নিহতের দেবর আওয়ামী লীগ নেতা নয়ন ও ননদ রানু বেগম এখনো পলাতক রয়েছে।
এদিকে, সাংবাদিক সম্মেলন শেষে চাঁদপুর প্রেস ক্লাব চত্বরে সচেতন নারী সমাজের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এতে চাঁদপুরের বিভিন্ন নারী সংগঠনের কর্মীরা অংশ নেন।