সৌদি নারীরা এখনো যে কাজগুলো করতে পারে না।
নারীদের জন্যে বিশ্বের সবচেয়ে রক্ষণশীল দেশগুলোর একটি সৌদি আরবে নারীরা এবার এমন একটি অধিকার পেতে যাচ্ছেন যেটা তারা উদযাপন করতেই পারেন।
দেশটিতে নারীর গাড়ি চালানোর উপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল সেটা তুলে নেওয়া হচ্ছে ২৪শে জুন। ফলে তারা খুব শীঘ্রই গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়তে পারবেন।
ফলে সৌদি নারীরা এখন যেগুলো করতে পারেন:
হলে গিয়ে সিনেমা দেখতে পারেন
খেলা দেখতে পারেন স্টেডিয়ামে গিয়ে।
এবং পারেন গাড়ি চালাতে।
সৌদি আরবে সমাজকে আধুনিক করে তুলতে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যেসব সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন তার অংশ হিসেবেই নারীদেরকে সেসব অধিকার দেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু সৌদি আরবে নারী হয়ে জন্ম নিয়ে সেখানে বসবাস করা এখনও খুব একটা সহজ কিছু নয়।
বিবিসির সাংবাদিক মেঘা মোহান তার শৈশবে ছিলেন সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে। তিনি বলছেন, সেসময় তার মা যখনই স্বামীকে ছাড়া কোথাও যেতে চেয়েছেন তখনই তাকে তার পিতার কাছ থেকে লিখিতভাবে অনুমতি নিতে হতো।
১. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন না।
একজন নারী হয়তো গাড়ি চালাতে পারবেন কিন্তু সেটি কিনতে পারবেন না। পরিবারের পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া একজন নারী এখনও তার নিজের কোন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন না। সৌদি আরবে অভিভাবকত্ব সংক্রান্ত যে ব্যবস্থা আছে তার কারণেই সেটা করা সম্ভব নয়। এর অর্থ হলো প্রত্যেক নারীর একজন করে পুরুষ অভিভাবক আছেন যিনি তার পক্ষ হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন।
২. পাসপোর্ট নিতে পারেন না অথবা বিদেশে যেতে পারেন না
গাড়ি চালিয়ে হয়তো বিমান বন্দর পর্যন্ত যেতে পারবেন কিন্তু কোন পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া ওই নারী বিমানে উঠতে পারবেন না।
৩. বিয়ে করতে কিংবা তালাক দিতে পারেন না
কাউকে বিয়ে করতে চাইলে পুরুষ অভিভাবকের কাছ থেকে এবিষয়ে অনুমতি নিতে হবে। ওই নারীর পাঁচ বছর বয়সী একজন ছোট ভাইও কিন্তু তার অভিভাবক হতে পারেন। ওই বিয়ে যদি ঠিকমতো চলতে না থাকে তখন কি হবে? বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাকের জন্যেও ওই নারীকে তার স্বামীর অনুমতি নিতে হবে।
৪. কোন পুরুষ বন্ধুর সাথে বসে কফি খেলতে পারেন না
ম্যাকডোনাল্ডস বা স্টারবাক্স যেকোনো দোকানেই পরিবার এবং পুরুষদেরকে আলাদা আলাদা জায়গায় বসতে হবে। আর সকল নারীকে বসতে হবে পরিবারের জন্যে নির্ধারিত এলাকায়। যদি সেরকম না হয় তাহলে ওই নারীকে গ্রেফতারও করা হতে পারে।
৫. যা চাইবেন সেটাই পরতে পারেন না
কোন নারী যখন জনসমক্ষে আসবেন তখন তার মুখ ঢাকতে হবে না। কিন্তু তার শরীর আপাদমস্তক ঢেকে রাখতে হবে। কোন নারী যদি সমুদ্রে সৈকতে বেড়াতে যান সেখানে বিকিনি পরার কোন সুযোগ নেই। মনে রাখতে হবে যে সৌদি আরবে গড় তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তবে একটা জিনিস বলে রাখা ভালো, সৌদি আরবে কোন কোন নারী হয়তো এখনও এ কাজগুলো করছেন। আর কোন নারী যদি বিদেশি হন কিম্বা খুব বেশি ধনী হন তাহলে তার পক্ষে এসব আইন ভঙ্গ করা সহজ।
আবার সরকার যদি চায় তাহলে এসব আইন পালনে তারা অত্যন্ত কঠোর হতে পারে। পারে কড়া শাস্তি দিতেও।
তাই নারীরা যদিও খুব শীঘ্রই রাস্তায় গাড়ি চালাতে পারবেন তারপরেও সৌদি আরব পুরুষদের একটি দেশ।