১১ মাসে রফতানি আয় বেড়েছে ৬.৬৬ শতাংশ
চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) রফতানি আয় বেড়েছে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ।এ সময়ে রফতানি আয় হয়েছে তিন হাজার ৩৭২ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার।তবে রফতানি আয় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে আছে।
অন্যদিকে,একক মাস হিসেবে সর্বশেষ মে মাসে রফতানি আয় আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ৯ শতাংশ বেড়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন হাজার ৩৮৭ কোটি ৭ লাখ ডলার।এর বিপরীতে আয় হয়েছে তিন হাজার ৩৭২ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার। আর গতবছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল তিন হাজার ১৬২ কোটি ২৮ লাখ মার্কিন ডলার।
অন্যদিকে,মে মাসে রফতানি আয় হয়েছে ৩৩২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩৮ কোটি ডলার। গত বছর মে মাসে আয়ের পরিমাণ ছিল ৩০৪ কোটি ৭৬ লাখ ডলার।
প্রধান রফতানি পণ্য পোশাক খাতের আয় ধারাবাহিকভাবে ভাল হওয়ায় রফতানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ বাসসকে বলেন,বাংলাদেশের রফতানি খাত মূলত পোশাক নির্ভর। রফতানিতে পোশাক খাতের অবদান দিন দিন বাড়ছে। তবে রফতানি আয় আরো বাড়াতে প্রচলিত বাজার ছাড়াও নতুন বাজারের সম্ভাবনা কাজে লাগানো এবং পোশাকের পাশাপাশি পণ্য বহুমূখীকরণ বিশেষ করে বেশি মূল্য সংযোজন হয় এমন পণ্য রফতানির প্রতি মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতির (ইএবি) সভাপতি আব্দুস সালাম মূর্শেদী বাসসকে বলেন,রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে পোশাক খাত রফতানিতে ভাল করছে। আগামী বাজেটে করপোরেট করহার কমানো হলে পোশাক থেকে রফতানি আয় আরো বাড়বে।
তিনি পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য রফতানি বাড়াতে বৈচিত্র্যপূর্ণ শিল্প পণ্যের ক্ষেত্রে সরকারের নীতি সহায়তা ও প্রনোদনা দেওয়ার সুপারিশ করেন।
ইপিবির হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী,পোশাক খাতের নিট পণ্য (সোয়েটার,টি-শার্ট জাতীয় পোশাক) রফতানি আয় ও প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দুই-ই বেড়েছে।এক হাজার ৩৬৪ কোটি ১১ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৯৪ কোটি ডলার।প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২ দশমিক ১৯ শতাংশ বেশি রফতানি আয় হয়েছে।
গতবছরের প্রথম ১১ মাসে নিট পণ্যের রফতানি আয় ছিল এক হাজার ২৫০ কোটি ৪৯ লাখ ডলার।
আলোচ্য সময়ে ওভেন পণ্যেও (শার্ট, প্যান্ট জাতীয় পোশাক) রফতানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। এক হাজার ৩৬০ কোটি ৫ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ওভেন পণ্য রফতানি হয়েছে এক হাজার ৪১৮ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের। গতবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল এক হাজার ৩১১ কোটি ৯৮ লাখ ডলার।
জুলাই-মে সময়ে বড় কৃষিজাত পণ্যের রফতানি আয় বেড়েছে।এই খাতে রফতানি আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটি ৯০ লাখ ডলার,যার প্রবৃদ্ধি ১৮ দশমিক শুন্য ৭ শতাংশ। পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানিতে উল্লেখ করার মত প্রবৃদ্ধি হয়েছে,৭ শতাংশ। এ সময়ে এই খাত থেকে ৯৬ কোটি ৬৯ লাখ ডলারের রফতানি আয় এসেছে। বেডশীট,কিচেন টয়লেট লাইনস্সহ হোম টেক্সটাইল পন্য রফতানি থেকে আয় হয়েছে ৮২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
এছাড়া হিমায়িত মাছ, রাসায়নিক পণ্য সিমেন্ট,সল্ট,স্টোন, ইমারত তৈরির সরঞ্জাম ও সিরামিকের রফতানি আয় বেড়েছে।তবে চামড়া ও চামড়জাত পণ্যের রফতানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। গতবছরের প্রথম ১১ মাসে চামড়া ও চামড়জাত পণ্যের রফতানি ছিল ১১২ কোটি ৩৬ লাখ ডলার,এবারের একই সময়ে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার।