প্রাণের ৭১

নামছে আর্জেন্টিনা পতাকা, হচ্ছে দলবদল।

ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলের হারের পর দলের সমর্থকরা নিজেদের অবস্থান পাল্টে অন্যান্য দল সমর্থন শুরু করেছেন। লজ্জার এই হারের পর দলটির অনেক সমর্থকই নিজেদের মোবাইল ফোন বন্ধ ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেট করে রেখেছেন বলে আলোচনা চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
শুধু বাংলাদেশ নয়, ফলাফল কিংবা র্যাংকিংয়ের দিক থেকে ব্রাজিলের কাছাকাছি না হলেও শুধু বাংলাদেশিরাই নয় বরং আর্জেন্টিনার নাগরিকরাও মনে করেন ব্রাজিলই তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ। ১৯৩০ সালে বিশ্বকাপ খেলা শুরুর পর থেকে ব্রাজিল যতবার কাপ নিয়েছে। ততবার সেমিফাইনাল অব্দি যেতে পারেনি দলটি। তবুও ব্রাজিলকেই যে দেশটি সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ মনে করে তা ফুটে উঠেছে তাদের নানা কর্মে। ২০০৯ সালে দেশটির এক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের জন্য নির্মিত এক বিজ্ঞাপন চিত্রেও ফুটে ওঠে বিষয়টি।
মাঠ কিংবা সিনেমার পর্দা ছাপিয়ে ফুটবল নিয়ে এই দুই দেশ এবং দেশের সমর্থকদের উত্তাপ ছাড়িয়েছে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও। গেল ১৭ জুন সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ব্রাজিলের ম্যাচ ড্র হওয়ার পর খুলনার দৌলতপুরে ব্রাজিল সমর্থকদের তাচ্ছিল্য করার অভিযোগে দুই আর্জেন্টাইন সমর্থককে কুপিয়ে আহত করেন ব্রাজিল সমর্থকরা। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা-সমালোচনা তো ছিলই।
র্যাংকিংয়ের দিক থেকেও ব্রাজিলের থেকে তিন ধাপ পিছিয়ে থাকা আর্জেন্টাইন সমর্থকরা নানাভাবে বিশ্বের অন্যতম সেরা দলটির সমর্থকদের সঙ্গে পাল্লা দিতে শুরু করেন।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার লালপুর এলাকার টুটুল নামের এক ব্রাজিল ভক্ত নিজের ৬ তলা বাড়ির পুরোটাই ব্রাজিলের রঙে রাঙিয়ে বেশ আলোচনায় এসেছিলেন।
এর কয়েকদিন পর নারায়ণগঞ্জের গলাচিপা এলাকায় আর্জেন্টিনার পতাকার বাড়ি রাঙিয়ে আলোচনায় আসেন আউয়াল নামের এক ব্যক্তি।
এমন রেষারেষি চলতে থাকে পতাকা উড়ানোতেও। রাজধানীর এক বাড়ির ছাদে ব্রাজিল সমর্থকরা ২ ফিট পতাকা উড়ালে আর্জেন্টাইন সমর্থকরা উড়ান চার ফিট পতাকা।
বৃহস্পতিবার বিকেলেও যেসব স্থান আর্জেন্টিনার বড় বড় পতাকায় ছেয়ে ছিল সেগুলোর অনেকটাই শুক্রবার সকালেই নাই হয়ে যায়! মোহাম্মদপুরের টিক্কাপাড়া এলাকার ৬০ শতাংশেরও বেশি আর্জেন্টিনার পতাকা খুলে ফেলতে দেখা যায় শুক্রবার সকালে। রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য এলাকাতেও একই ঘটনা ঘটেছে।
পতাকা খুলে ফেলা প্রসঙ্গে গুলিস্থানের মানিক নামের এক আর্জেন্টাইন সমর্থক বলেন, এখনো দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়া আশা ফুরিয়ে না গেলেও এই টিম নিয়ে যে বিশ্বকাপ জেতা সম্ভব নয়, তা পরিষ্কার।
এদিকে, প্রিয় দলের হারের পর দলটির সর্বশেষ বিশ্বকাপ জয়ের নায়কের সঙ্গে কেঁদেছেন সমর্থকরাও। অনেকে লজ্জায় ফোন বন্ধ করে রেখেছেন। ফেসবুক অ্যাকাউন্টও ডিঅ্যাক্টিভেট করে রেখেছেন অনেকে।
এক আর্জেন্টাইন সমর্থক বলেন, ‘বন্ধুর সঙ্গে জরুরি কথা বলবো। কিন্তু খেলায় তার সমর্থিত দল হেরে যাওয়ায় ফেসবুক-মোবাইল ফোন সবই বন্ধ করে রেখেছে।
এদিকে নিজের সমর্থনের দলের এমন পারফরমেন্সের পর অনেকেই অভিমানে যেমন দল নিয়ে বাজে মন্তব্য করছেন তেমনি দলের সমর্থনও পাল্টাচ্ছেনও অনেকে।
আরএক আর্জেন্টাইন সমর্থক বলেছেন, প্রতিবারই ভাবি, দল পরিবর্তন করব। কিন্তু কোনোবারই হয়ে ওঠে না। কিন্তু এবার আর না, আর আর্জেন্টিনা না। এখন থেকে বিশ্বের সেরা দল ব্রাজিলের সাপোর্টার আমি।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*