সেপ্টেম্বরে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায় : আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারিক আদালতের রায় আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেয়া সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, এ রায়টি হলে দেশ আরও একটি দায় থেকে মুক্তি পাবে।
আইনমন্ত্রী আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিদেশ থেকে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার দ্রুত বিচারের দাবিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ।
আনিসুল বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি ৫২ জন। এর মধ্যে ১৭ জন পলাতক। আদালতে এ মামলায় ২২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পাশাপাশি আসামিদের প্রত্যেককে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ দেয়া হয়েছে।
আনিসুল হক বলেন, সর্বশেষ আসামি হিসেবে বাবরের যুক্তিতর্ক আগামী ২৬, ২৭ ও ২৮ আগস্ট উপস্থাপন হবে। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলেই রায় দেয়ার পালা। তিনি আশা করছেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আদালত এ রায় দিতে পারবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নিয়মতান্ত্রিকভাবে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি এমনও করতে পারতেন একটা স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল করে তিনদিনের মধ্যে বিচার করে সামারি ট্রায়াল করে অপরাধীদের ফাঁসি দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেন নি, দেশের আইন মেনেছেন এবং দেশের আইনি কাঠামো মেনেই তাদের বিচার চলছে।
মন্ত্রী বলেন, ২১ আগস্ট কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা হচ্ছে বাংলাদেশকে ব্যর্থ করার জন্য যে ষড়যন্ত্র তারই ধারাবাহিকতা। ষড়যন্ত্রকারীরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেছিলো। খুনিরা মনে করেছিলো যে, তারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে হত্যা করেছে। কিন্তু তারা বুঝতে পারে নাই যে, বঙ্গবন্ধুর রক্ত তার আরো দুই কন্যার মধ্যে প্রবাহিত। তারা বাংলাদেশে আসতে পারলে আবার যে বাংলাদেশ সূর্যের মুখ দেখবে সেটা ষড়যন্ত্রকারীরা ভাবেনি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে তারা অনেকবার হত্যার চেষ্টা করেছে। তাকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট হত্যা করার প্রচেষ্টা সেসব ষডযন্ত্রেরই অংশ ছিল।
তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের দল নয়। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় গিয়ে গঠিত একটি দল। বিএনপি ষড়যন্ত্র করতেই জানে। বিএনপি বিদেশের সাথে আমাদের সুসম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টাও করে।
মন্ত্রী বলেন,‘আমি আগেও বলেছি আজও বলছি, বঙ্গবন্ধুর একজন চিহ্নিত খুনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। দেশটির সাথে আমাদের অত্যন্ত সুসম্পর্ক রয়েছে। আমরা ওই খুনিকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এখন যারা কর্ণধার তারা বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে অত্যন্ত সংবেদনশীল। তারা আইনিভাবে তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমাদেরকে যথেষ্ট সহায়তা করছেন। কানাডা থেকে নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারেও আমরা অনেকটা এগিয়ে গেছি।’
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের চোখ খুলে দিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ উন্নয়ন চায় এবং সেই উন্নয়ন শেখ হাসিনার মাধ্যমেই চায়।
তিনি বিএনপি-জামায়াতকে ইঙ্গিত করে বলেন,‘আপনাদের ষড়যন্ত্র ও আসল উদ্দেশ্য সমন্ধে বাংলাদেশের জনগণ ওয়াকিবহাল। সেজন্যই নির্বাচনে আপনাদেরকে জনগণ ভোট দেবে না। আপনারা সেটা জেনেই নির্বাচনে আসতে চান না। আপনারা একেক দিন একেক অজুহাতের মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেন।’
আইনমন্ত্রী বলেন, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচন জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই হবে। কোন দল নির্বাচনে আসল, আর কোন দল নির্বাচনে আসল না সেটা সেই দলের উপর নির্ভর করে। কিন্তু কোন একটা দল নির্বাচনে আসবে না আর সেজন্য নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে বাংলার জনগণ তা হতে দিবে না।