প্রাণের ৭১

ছিনতাইয়ের মোবাইল উদ্ধার করে দেয়া শিশুর সঙ্গে পুলিশের বর্বরতা!

ফেনী রেলস্টেশনে ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করে দেয়া বাদশা (৯) নামে এক শিশুকে পুলিশ ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্মম নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার রাতে ফেনী রেলস্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই আরব আলীকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় তার পরিবার। বুধবার দুপুরে শিশু বাদশাকে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে আহত বাদশার চাচা মো. রাসেল পুলিশের এসআই আরব আলীর বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব সেবা ও সুরক্ষা বিভাগ ও পুলিশের আইজিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকতার বরাবরে আবেদন করেছেন।

ভুক্তভোগী পরিবার ও আহত শিশু বাদশা জানায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরগামী মেঘনা এক্সপ্রেসের যাত্রী থেকে স্যামসাং জে-৭ মোবাইল ফোন ছিনতাই করে ফেনী রেলস্টেশনের পেশাদার ছিনতাইকারী ইমন।

ইমনের ছিনতাইয়ের দৃশ্য দেখে শিশু বাদশা তার বাবা কালু ও তার চাচা রাসেলকে জানালে তারা ইমনকে আটক করে ছিনতাই করা মোবাইল ফোনটি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আরব আলীকে বুঝিয়ে দেন।

এ সময় আবর আলী মোবাইল ফোন থেকে সিম খুলে পাশের ড্রেনে ফেলে দিয়ে ফোনটি তার সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি করে দেন। এ বিষয়টি দেখে বাদশার মা জুলেখা প্রতিবাদ করতে চাইলে এসআই অরব আলী ক্ষিপ্ত হয়ে যান। এবং তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন।

২৪ সেপ্টেম্বর এসআই আরব আলী এবং পুলিশ সদস্য নয়ন রেলস্টেশন থেকে বাদশাকে আটক করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে হাত-পায়ের তালুতে অমানুষিক নির্যাতন ও শিশুটির পায়ের নখ নষ্ট করে দেন।

তাকে ছাড়িয়ে আনতে বিভিন্ন স্থানে তদবির করে ব্যর্থ হয়ে মঙ্গলবার রাতে এসআই আরব আলীকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে শিশু বাদশাকে মুক্ত করে আনে তার পরিবার। পরে বুধবার সকালে আহত শিশুকে ফেনী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।

হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক নির্যাতনের ঘটনায় মামলা করার পরামর্শ দেন।

পরে ভুক্তভোগী পরিবার বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজি, চট্টগ্রামের রেলওয়ে পুলিশের এসপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাবরে ন্যায়বিচার চেয়ে আবেদন করেন।

ফেনী রেলস্টেশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, এসআই আরব আলী যোগদানের পর থেকে ফেনীতে অপরাধের মাত্রা বেড়ে গেছে। আমাদের পক্ষ থেকে রেল কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। ইতিপূর্বে তার অপকর্মের কারণে তাকে ফেনী থেকে প্রত্যাহার করা হয়। কয়েক মাস পর পুনরায় বদলি হয়ে আবারো ফেনী স্টেশনে যোগ দেন আরব আলী।

অভিযোগের বিষয়ে এসআই আরব আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এসব অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*