এবার পথে নামো সাথী৷৷
জাফর ওয়াজেদ
পথে এবার নামতে হবে। দেশপ্রেমিক বাঙালী জনগণের আজ প্রয়োজন একাত্তরের মতো ইস্পাত দৃঢ় আদর্শিক ঐক্য। মনে রাখতে হবে, পরাজয়ের পথের, সব প্রতিবন্ধকতা করতে হবে দৃঢ়। কারণ, পরাজিত হলে বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি যেমন পড়বে মুখ থুবড়ে, তেমনই চিরতরে হারিয়ে যাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত আদর্শ। মুক্তিযুদ্ধের অর্জিত বাংলাদেশে আবারও গাড়িতে পতাকা ওড়াতে একাত্তরের মানবতা বিরোধীসহ স্বাধীনতার শত্রæরা।
দুয়ারে কড়া নাড়ছে ভোট। ভোটের আওয়াজ ক্রমশ ভেসে আসছে জনজীবনের নিত্যদিনের যাপিত সময়ে। কিন্তু নির্বাচনী ঝড় এখনও ঘনীভ‚ত হয়ে ওঠেনি। তবে নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, বাড়ছে ততই উদ্বেগ-উৎণ্ঠা। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রার্থিতা নিয়ে চলছে নানা ধরনের প্রতিযোগিতা। আর এ প্রতিযোগিতার মধ্যে আছে হিংসা, বিদ্বেষ। দলীয় মনোনয়ন পাবার জন্য একাধিক প্রার্থীর তৎপরতা তৈরি করছে কোন্দল। কে মনোনয়ন পাবে, কে পাবে না, তা আগাম নির্ধারণ করার মতো কৌশল ও প্রক্রিয়া রাজনৈতিক দলগুলোর নেই। আর তা না থাকার কারণে নির্বাচনের আগে মনোনয়ন না পাওয়া ব্যক্তিরা দল বদলেও পিছপা হন না। অনেক সময় দেখা যায় মনোনয়নপত্র জমাদানের পূর্ব মুহ‚র্তেও প্রার্থী বদল হয়। এমন অনেক নির্বাচনী এলাকা রয়েছে, যেখানে দলগুলোর একাধিক প্রার্থী রয়েছে। জনগণের কাছে এদের কারও কারও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। অনেকের নেই। যাদের নেই তাদের অনেকের আছে অর্থ-বিত্ত প্রতিপত্তি। আর তারই জোরে দলের মনোনয়ন পাওয়ার জন্য হয়ে উঠে মরিয়া। অর্থের বিনিময়ে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ঘটনা অতীতে বহু ঘটেছে। সে সব নিয়ে মারামারি, হানাহানি, এমনকি খুন খারাবিও হয়েছে। এখনও দেখা যায়, প্রার্থীদের কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে একেকটি গোষ্ঠী। হয়ে উঠছে তারা প্রতিপক্ষ নিজ দলেরই অনুসারীদের। এ চিত্র এদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় অনেক দিনের। এই অর্গল ভাঙ্গার কাজটি করা হয় না। প্রার্থী বাছাই নিয়ে ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে দ্ব›দ্ব যেমন বাড়ে, তেমনি দলের অভ্যন্তরে সৃষ্টি হয় ক্ষতের। দলীয় নীতি, আদর্শের তখন হয় জলাঞ্জলি। জনগণের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি থেকে যায় উপেক্ষিত। দর্পণে যদি দেখতে পেত নিজের অবয়ব, তাহলে অনেকেই প্রার্থী হতে মরিয়া হয়ে উঠত না। রাজনৈতিক দলগুলো শেষ মুহ‚র্তে এসে প্রার্থী বাছাই করার কারণে নানা গোলযোগ তৈরি হয়। যা নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এসব অব্যবস্থা দূর করেÑ একটি সঠিক ব্যবস্থা তৈরির কাজটি নিয়ে কোন দলই এগিয়ে আসে না। নির্বাচন কমিশন আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে একাদশ সংসদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরুর কথা জানিয়ে দিয়েছে। বর্তমান সরকারের মেয়াদ আগামী ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে। তার আগে চলতি বছরের ২৭ ডিসেম্বর নির্বাচন হওয়ার কথা বলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভোটের ঢাকঢোল বাদ্যি বাজা শুরু হয়ে গেছে। আলোচনা-সমালোচনা, তর্ক-বিতর্ক, বাদ-প্রতিবাদের শব্দও শোনা যায় শহরে, নগরে, গ্রামে-গঞ্জে। গণমাধ্যমেও কে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন, সে সব সচিত্র ছাপা হচ্ছে। প্রার্থী হতে চাওয়াজনরা দেদার গণসংযোগ করছেন। জনসমর্থন পাওয়ার জন্য মানুষের দুয়ারে দুয়ারেও যাচ্ছেন অনেকে। জনবিচ্ছিন্নরাও সচেষ্ট গণসংযোগে। কিন্তু ভোটারের মন যেন ‘সখা সহস্র বছরের সাধনার ধন।’ তাই ভোট কেন্দ্রে ব্যালট হাতে নেয়ার আগেও ভোটারদের মন বদল হয়ে যেতে পারে। এই ভোটারদের কাছে প্রার্থী যদি নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে না পারে, তবে তো সমূহ বিপদ এসে জড়ো হবার ক্ষেত্র তৈরি হয়ে যায়।
নির্বাচন জীবনের ধর্ম। অসত্যকে, অসুন্দরকে, গণচেতনাবিরোধীকে বর্জন করে মানুষ তথা ভোটার। এই গ্রহণ-বর্জন পালার মধ্য দিয়েই চলে জীবন ও জগতের এবং রাষ্ট্রের ক্রমবিকাশ। রাষ্ট্রিক অবয়বের পূর্ণ থেকে পূর্ণতর হয়ে ওঠার প্রক্রিয়া এই নির্বাচন। নির্বাচন যেখানে নিষিদ্ধ, প্রাণ সেখানে প্রতিরুদ্ধ। সেখানে একনায়কতন্ত্র মাথাচাড়া দেয়। যা পঁচাত্তর পরবর্তী বাংলাদেশ অবলোকন করেছে শুধু নয়, ভুক্তভোগীও হয়েছে। বলা হয়, গণতন্ত্রে মুক্তি। গণতন্ত্র সার্বিক বিকাশের অঙ্গীকার। নির্বাচন এই গণতন্ত্রের প্রাণ। তাই বলে শুধু নির্বাচন মানে গণতন্ত্র নয়। বাংলাদেশ দুই সামরিক জান্তা শাসকের দুঃশাসনের ও স্বৈরতন্ত্রের ভুক্তভোগী হিসেবে দেখেছে একনায়কতন্ত্র সাধকদের সর্বাঙ্গে নির্বাচন নামক প্রহসনের নামাবলী। সামরিক শাসনের ইউনিফর্মের ওপরে চাপানো হয় গণতন্ত্রের আলখাল্লা। বলা যায়, ‘মার্শাল গণতন্ত্র’। মানবাধিকারের সর্বোত্তম প্রতীক গণতন্ত্রকে প্রকাশ্যে অস্বীকার করা অসম্ভব বলেই সামরিক জান্তা শাসক নামধারী দুর্বৃত্তদের নিতে হয়েছে ছলনার আশ্রয়। ঘরোয়া গণতন্ত্র, বুনিয়াদী গণতন্ত্র, সামরিক গণতন্ত্র, বহুদলীয় গণতন্ত্র ইত্যাদির অভিধার সৃষ্টি করেছিল। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ পর্বে সামরিক জান্তা শাসকরা ক্ষমতা কুক্ষিগত করার লক্ষ্যে জনগণের অধিকারকে পদদলিত করেছে। নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছিল। পাকিস্তান পর্বে সাধারণ জনগণের ভোটাধিকার অর্জন করতে হয়েছিল আন্দোলন, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। যেমনটা বাংলাদেশের ক্ষমতাদখলকারী দুই সামরিক জান্তা শাসকের সময়ও ভোটাধিকার হরণের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে প্রাণ বিসর্জনও দিতে হয়েছে। তার পরও জনগণকে ভোট কেন্দ্রে যেতে দেয়া হয়নি। ভোট কেন্দ্র দখল, জাল ভোট প্রদান, ভোটারদের হুমকি, এমনকি পোলিং এজেন্ট নিয়োগে বাধা দান এদেশবাসী দেখেছে পঁচাত্তর পরবর্তীকাল হতে। এ দেশে ভোট ও নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংসের সমস্ত আয়োজনটা হয়েছে জিয়া ও এরশাদ নামক ক্ষমতা দখলকারী, যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকার পুনর্বাসনকারীদের হাতেই। ওরা আইয়ুব-ইয়াহিয়ার প্রেতাত্মা হিসেবে আবিভর্‚ত হয়েছিল। জিয়ার হ্যাঁ-না ভোট, ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন নামক মিডিয়া ক্যুর ভোটের ফল জনগণকে স্তম্ভিত করেছিল বৈকি। বিশ্ববাসীও হয়েছিল হতবাক। উর্দিপরা ব্যক্তিটি ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য যা করেছে তাতে এ দেশবাসী ভাবতেই পারেনি, কোনদিন তারা আর ভোট দিতে পারবে। সংবিধান সংশোধনও নিজ স্বার্থে করেছে জিয়া। দেশকে পাকিস্তানী ভাবধারায় ফিরিয়ে নিতে কম কসরত করেনি এই পাকিস্তানীমনা বাঙালী বংশোদ্ভ‚ত ব্যক্তিটি। আর তার উত্তরসূরি বিচারপতি সাত্তার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের নামে জিয়াসৃষ্ট অনিয়মগুলোকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন। তার দলের পাÐাদের হুমকিতে আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রপতি প্রার্থী ড. কামাল হোসেন দেশ ছেড়ে পালিয়ে ছিলেন।
ক্ষমতা দখলকারী অপর সামরিক শাসক এরশাদ তো নির্বাচনে প্রার্থীকে ভোট কেন্দ্রের ধারে-কাছেও যেতে দেয়নি। সশস্ত্রপন্থায় ভোট কেন্দ্র দখলের মহড়া দেখা গেছে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালের সংসদ নির্বাচনে। তখন স্থানীয় সরকারসহ সব নির্বাচনে সহিংসতার মাত্রা এমন ছিল যে, বহু মানুষ হতাহতও হয়েছে। জিয়ার ‘মার্শাল ক্যু’ ও ‘মিডিয়া ক্যু’র ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বিজয়ী প্রার্থীকে হারিয়ে দেয়ার কাজটি সুচারুরূপে কার্যকর করেছিল এরশাদ। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা ও ক্ষমতায় পুনর্বহাল হওয়ার লক্ষ্যে দুর্বৃত্তায়নকেই প্রাধান্য দিয়ে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে লÐভÐ করেছিল। ২০০১ সালের নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা প্রদান করে নিয়োগ করেছিল তত্ত¡াবধায়ক সরকার প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমান বিএনপি-জামায়াত জোটকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য। প্রতিদ্ব›দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের কেন্দ্রেও আসতে দেয়া হয়নি অনেক স্থানে। এমনকি কাউকে কাউকে শারীরিকভাবে নির্যাতনও করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ভোটের আগেই আটক করার ঘটনা অজস্র। নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, হামলা চালিয়ে আহত করার ভূরি ভূরি ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। ভয়ে মানুষ ভোট কেন্দ্রে যায়নি।
১৯৯৬ সালের ফেব্রæয়ারিতে খালেদা জিয়ার অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনটি ছিল সর্বকালের সর্বসেরা প্রহসনের নামান্তর। ভোটারবিহীন ওই নির্বাচনে মিডিয়ার মাধ্যমে ফল ঘোষণা করা হয়েছিল। সে সব দেশের মানুষ ভুলে যায়নি। ১৯৯৬ সালের অপর নির্বাচন হয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে খালেদা মনোনীত স্বাধীনতাবিরোধী আবদুর রহমান বিশ্বাস ও তত্ত¡াবধায় সরকারপ্রধান বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে। নির্বাচনকালে বিএনপি হেরে যাওয়ার ভয়ে ভীত হয়ে সেনাপ্রধানকে ব্যবহার করেছিল অভ্যুত্থান ঘটাতে। যদিও তা ব্যর্থ হয়। ২০০৬ সালে খালেদা জিয়া আরেক খেলা দেখান তার নিযুক্ত রাষ্ট্রপতি ড. ইয়াজদ্দিনকে দিয়ে। তার আগে তাদের সমর্থক একজন বিচারপতিকে তত্ত¡াবধায়ক সরকারপ্রধান করার জন্য বিচারপতিদের চাকরির বয়সসীমা বাড়িয়েছিল সংবিধান সংশোধন করে। গণআন্দোলনের মুখে তাকে তত্তাবধায়ক সরকারের প্রধান করতে না পেরে ইয়াজউদ্দিন নিজেই প্রধান হন। তা নিয়ে জল ঘোলা হলে ফখরুদ্দিন প্রধান হন। সেনা সমর্থিত সেই সরকার ড. কামাল ও ড. ইউনূসের ‘কুপরামর্শে’ দু’বছর দেশ শাসন করে। সে সরকারকে আরও দীর্ঘায়িত করতে চেয়েছিল ওই দুই ডক্টর। শেখ হাসিনাকে দল ও রাজনীতি থেকে ‘মাইনাস’ করতে চেয়েছিল তারা। তাকে জেলবন্দীও করা হয়। সেই ইতিহাস সবারই জানা।
২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি যে খেলা খেলতে চেয়েছিল, তা তাদের জন্য ব্যুমেরাং হয়েছে। হাওয়া ভবন আর খাম্বা সংস্কৃৃতির কথা মানুষ ভুলে যায়নি। রাজনৈতিক দেউলিয়াতে পরিণত হয়েছে বিএনপি। যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতকে পরিবারের সদস্য বানিয়ে সব হারাদের দলে নাম লিখিয়েছে। অবস্থা এখন এমন বেগতিক যে, রাজনৈতিক এতিমদের ঘাড়ে তাদের সওয়ার হতে হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম একাত্তরের শেষে পালিয়ে পাকিস্তান যায়। সেখানে থেকে সৌদি আরব হয়ে লন্ডনে ঘাঁটি গাড়ে। পূর্ব-পাকিস্তান পুনরুদ্ধার প্রকল্প নিয়ে মাঠে নামে গোলাম আযম ও তার অনুসারীরা। পঁচাত্তরের পর জিয়া সেই প্রকল্পকে সম্প্রসারিত করার জন্য দেশকে পাকিস্তানী ভাবধারায় নিয়ে যায়। খালেদা সেই ধারাকে এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তিদানের ঘটনায় ক্ষুব্ধ যেমন খালেদা তেমনি পাকিস্তানের পার্লামেন্ট। সেখানে তাদের পক্ষে শোক প্রকাশও করা হয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় অবিশ্বাসী জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি পাকিস্তানকে ফিরে পেতে চায়। এ কারণেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা হয়। শেখ হাসিনা সরকারের পতনে পাকিস্তানের জামাতা ড. কামাল হোসেন ও মার্কিনীদের একদা জামাতা ড. ইউনূস একাত্মা হয়ে মাঠে নেমেছেন। এদের লক্ষ্য সম্পর্কে সবাই অবগত। তাদের সহযোগিতায় দেশের গণমাধ্যমের কতিপয়রাও সংযুক্ত। দেশ উন্নয়নের দিকে ধাবিত হচ্ছিল বলেই তারা ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে জীবন্ত মানুষ হত্যাসহ ধ্বংসাত্মক কাজে নেমেছিল। সেখানেও ব্যর্থ হয়েছে। দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা ও তদীয়পুত্র তারেক রহমান দেশবিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তান ছাড়া তাদের পাশে কেউ নেই। অতীতের মতো কোন দেশ তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবেÑ এই দিবাস্বপ্নে বিভোর হয়ে তারা ব্যর্থতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। ব্যর্থকাম মানুষ যে কোন অনর্থ ঘটাতে পারে।
পথে এবার নামতে হবে সব সাথীকে। পথ বলতে বুঝি হাজার বছর ধরে এই ব-দ্বীপের মানুষ যে শিক্ষা-সংস্কৃতি লালন করে আসছে। তাকে রক্ষা করা। পথ ভুল করবে না আদর্শবাদ বাঙালী। পাকিস্তান পর্বে বঙ্গবন্ধু বাঙালীর স্বাধিকারের জন্য লড়াই করেছেন। জেল খেটেছেন। সেই সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে সামরিক ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যেও ১৯৭০ সালে নির্বাচনে অংশ নিয়ে একচেটিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠতা পান তার ঘোষিত ৬ দফার পক্ষে। শাসকরা বাঙালির হাতে ক্ষমতা তুলে না দিয়ে গণহত্যা শুরু করেছিল। স্বাধিকার তখন পরিণত হয়েছিল স্বাধীনতায়। সশস্ত্র যুদ্ধে বাংলাদেশ নামক ভ‚-খন্ড জেগে উঠেছিল বিশ্ব মানচিত্রে। একাত্তরের সেই পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তান আজও মরিয়া। তাই এবারের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত ও কামাল গংয়ের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। পশ্চাদপদ দেশ পাকিস্তান আজ। জান্তারা এখনও দেশ চালায়। তারা খালেদাকে ক্ষমতায় আনার জন্য অতীতে টাকা ঢেলেছিল বলে সে দেশের সংসদেই বলা হয়েছে। আজ আবার তারা অর্থ সরবরাহ করছে। বাংলাদেশ থেকে পিছিয়ে থাকার কারণে পাকিস্তান এদেশের ক্ষতিই চাইবে। তাই তাদের শক্র বঙ্গবন্ধুর পর এখন তার কন্যা শেখ হাসিনা। একাদশ সংসদ নির্বাচন আমাদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ কি আবার পাকিস্তানী ভাবধারায় ফিরে যাবে, নাকি সার্বভৌমত্ব রক্ষা পাবে। তাই সচেতন দেশপ্রেমিকদের দায়িত্ব হয়ে গেছে একাত্তরের চেতনায় দেশ রক্ষায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে এগিয়ে নেয়া। এ থেকে সামান্য বিচ্যুত হলে বাংলাদেশ, বাঙালী আর থাকবে না। আমরা যেন সে ভুল না করি।