দেশে সব বাস টার্মিনালগুলোতে ইলিয়াস কাঞ্চনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলো পরিবহন শ্রমিকেরা
নিরাপদ সড়ক চাই’ সংগঠনের প্রধান উদ্যোক্তা ও চেয়ারম্যান চলচ্চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেশের সকল টার্মিনালে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
রোববার রাজধানীর ফুলবাড়িয়া টার্মিনালে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতারা এ ঘোষণা দেন।
সমাবেশে সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ সাত দফা দাবি মেনে নিতে সরকারকে আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। অন্যথায় ১৩ অক্টোবর থেকে সারাদেশে লাগাতার পরিবহন ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
এ সসয় সড়ক দূর্ঘটনায় ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রীর নিহত হওয়ার ঘটনায় তার নিজের গাড়ির চালক দায়ী দাবি করে দেশের সব টার্মিনালে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন পরিবহন শ্রমিক-মালিক নেতারা। পাশাপাশি সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ ও আইন সচিবের তীব্র সমালোচনা করেন।
প্রসঙ্গত, চলচ্চিত্রে ব্যস্ততম তারকা থাকাকালীন সময়ে ১৯৯৩ সালে চলচ্চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হন। এ দুর্ঘটনায় পর অভিনয় থেকে নিজেকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে সড়কে নিরাপত্তার দাবিতে গড়ে তোলেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ নামের একটি সংগঠন। এ সংগঠনের ব্যানারে দেশজুড়ে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন এবং জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করে আসছেন তিনি।
সম্প্রতি রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী বাস চাপায় নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সড়কে নিরাপত্তার দাবিতে সারাদেশের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসে। শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভে একাত্ম ঘোষণা করে রাজপথে তাদের পাশে ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন।
এরপর থেকেই পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা তার প্রতি ক্ষুব্ধ। সেই ধারাবাহিকতায় টার্মিনালগুলোতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ খ্যাত এই নায়ককে। সে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সহসভাপতি সাদিকুর রহমান হিরু।
উল্লেখ্য যে, মানিকগঞ্জে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনায় জামির হোসেন নামের এক বাস চালকের যাবজ্জীবন সাজা এবং ঢাকার সাভারে ট্রাকচাপা দিয়ে এক নারীকে হত্যার দায়ে আদালতে ট্রাকচালক মীর হোসেনের ফাঁসির রায় হলে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারীর শেষ সপ্তাহে পরিবহন শ্রমিক নেতারা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির কর্মসূচি দেন। আদালত কর্তৃক দেয়া রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে পরিবহন ধর্মঘটের নামে কার্যত দেশকে অচল করে দেয় পরিবহন সিন্ডিকেট।