বাউলশিল্পী সামছেল হক চিশতীর ইসলাম নিয়ে একটি মন্তব্যে শনিবার রাতভর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে উত্তেজনা।
যদি থাকে নসিবে, আপনা আপনি আসিবে— গান দিয়ে খ্যাতি অর্জন করা বাউলশিল্পী সামছেল হক চিশতীর ইসলাম নিয়ে একটি মন্তব্যে শনিবার রাতভর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে উত্তেজনা বিরাজ করে। পরে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
সদর মডেল থানায় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার শীর্ষ আলেমদের বৈঠকে বাউল সামছেল হক চিশতী নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এরপর রাত আড়াইটার দিকে তিনি থানা থেকে বের হয়ে যান।
সামছেল হক চিশতী সাংবাদিকদের জানান, গানের সময় ধর্ম নিয়ে তিনি কী বলেছেন, তা নিজেও জানেন না।
তিনি আরো বলেন, ‘মঞ্চে আমি মাগো, আমি স্কুলেতে আর পড়ব না হাট্টিমা টিম টিম, মাদ্রাসাতে পড়ব গিয়ে আলিফ-লাম-মীম— গানের এই বাক্যের সঙ্গে মিল রেখে গাইছিলাম। তবে আমি অসুস্থ থাকায় গানের কথা এলোমেলো হয়ে গেছে। কী বলেছি মনে করতে পারছি না। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের জন্য ক্ষমা আমি ক্ষমা প্রার্থী।’
জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী বলেন, ‘সামছেল হক চিশতী ইসলাম ধর্ম নিয়ে যে কটূক্তি করেছেন, তা মেনে নেয়া যায় না। পরে সবার উপস্থিতিতে তিনি ক্ষমা চান, ভুল স্বীকার করে তওবা করেন। ভবিষ্যতে আর এমন হবে না বলে অঙ্গিকার করেন।’
শনিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে চতুর্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বাউল গানের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। সেখানে গান পরিবেশন করেন বরেণ্য বাউলশিল্পী সামছেল হক চিশতী।
গানের মাঝে ঈশার নামাজের বিরতিতে তিনি ইসলাম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে জানান উপস্থিত দর্শকরা। এ খবরে জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার ছাত্ররা শহরের টিএ রোডে বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে মেলাস্থলে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় সামছেল হক চিশতীকে। বিক্ষুব্ধরা তার প্রাইভেটকার ছাড়াও উন্নয়ন মেলার কয়েকটি স্টল, মাইক ও স্টেজ ভাংচুর করে। পরে পুলিশ বাউলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান বলেন, ‘একটি গানকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসার ছাত্রদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত।’