পরিচয় মিলল ৪ লাশের, ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়ার অভিযোগ
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় উদ্ধার হওয়া চার লাশের পরিচয় মিলেছে। রোববার ও সোমবার তাদের শনাক্ত করেন স্বজনরা। তাদের ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়ার অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা।
সোমবার অজ্ঞাত ৩ জনের পরিবার ও স্বজনরা এসে লাশ শনাক্ত করেছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, লাশ পাওয়ার সাত দিন আগে ডিবি পরিচয়ে তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই তারা নিখোঁজ ছিল।
এর আগে রোববার মাইক্রোবাস চালক লুৎফর রহমানের (৩০) লাশ শনাক্ত করেন তার স্ত্রী। রাজধানীর রামপুরা থানার বাগিচারটেক এলাকার বাসিন্দা রেশমা বেগম রোববার দুপুরে মর্গে এসে তার স্বামীর লাশ শনাক্ত করেছেন।
অন্যরা হলেন পাবনা জেলার আতাইকুলা ইউনিয়নের ধর্মগ্রাম এলাকার সবুজ সরদার, একই গ্রামের ফারুক হোসেন ও জহিরুল ইসলাম। সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে তাদের পরিবারের স্বজনরা নারায়ণগঞ্জ সদরের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে এসে লাশ শনাক্ত করেন।
ডিবি পুলিশের পরিচয়ে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে নিহতদের স্বজনরা দাবি করলেও পুলিশ বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
এদিকে চারটি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রোববার রাতেই আড়াইহাজার থানা পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে।
নিহতদের স্বজনরা জানান, বেকারির কারিগর সবুজ সরদার অভাবের তাড়নায় পরিবারের ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য বাড়তি আয়ের উদ্দেশ্যে সোমবার ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এর পরদিন থেকেই সবুজের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকে। জহিরুল ইসলাম সবুজের সঙ্গে একই বেকারিতে কাজ করত এবং ফারুক হোসেন বাসচালক বলে জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা। তারা তিনজনই একে অপরের পূর্বপরিচিত বলে জানা গেছে।
স্বজনদের দাবি, তারা কেউই রাজনীতি বা অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল না। গত সোমবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা এলাকা থেকে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে সবুজ, ফারুক ও জহিরুলকে তুলে যাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন স্বজনরা।
তবে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) জানান, রোববার একজনের লাশ হস্তান্তরের পর এখন পর্যন্ত কোনো পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ লাশ শনাক্তকরণের ব্যাপারে থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।
দুইটি মামলা দায়েরের বিষয় স্বীকার করে তিনি জানান, এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত সে ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে।
ডিবি পুলিশের পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সংস্থা এ ধরনের অভিযান চালায়নি।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার পাঁচরুখী এলাকা থেকে গতকাল রোববার সকালে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চারটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুটি পিস্তল ও একটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়।
বিকালে রাজধানীর রামপুরা এলাকার লুৎফর মোল্লার লাশ শনাক্ত করেন তার স্ত্রী রেশমা বেগম। রাতেই পুলিশ তার কাছে লাশ হস্তান্তর করে। লুৎফর জব্দকৃত মাইক্রোবাসের চালক ছিল।