প্রাণের ৭১

রহস্যজনক গুম-খুন-অপহরণের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে

গুম-খুন-অপহরণের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। ছিনতাই-ডাকাতি-রাহাজানির ঘটনা তো আছেই। আছে ‘পুলিশ পরিচয়ে’ মানুষকে তুলে নিয়ে অর্থ আদায়ের অপতৎপরতা। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে রহস্যজনক হত্যাকাণ্ড। এসব ঘটনায় মানুষ রীতিমতো আতঙ্কিত। এমনই চাঞ্চল্যকর দুটি খবর রয়েছে গতকালের পত্রিকায়। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে গত শনিবার ভোরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে দুটি করে চারটি মৃতদেহ পাওয়া যায়। প্রতিটি মৃতদেহে মাথার পেছনে গুলির চিহ্ন রয়েছে। শুধু একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি ঢাকার রামপুরায় বসবাসকারী একজন গাড়িচালক। কে বা কারা তাঁদের খুন করেছে কিছুই জানা যায়নি। একই দিনে অন্য ঘটনায় ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় থাকা কাশবনের ভেতর থেকে দুটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশে পচন ধরে যাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে, কয়েক দিন আগে তাদের খুন করা হয়ে থাকতে পারে। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে; কিন্তু জানা যাচ্ছে না কারা তাদের হত্যা করছে।

মানুষ এক বেলা কম খেয়ে হলেও পরিবার-পরিজন নিয়ে একটু শান্তিতে ও নিরাপদে থাকতে চায়। কিন্তু দেশ থেকে সেই পরিবেশ ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছে। গতকালের পত্রিকায়ই দেখা যায় আরো কিছু নৃশংস হত্যাকাণ্ডের খবর। এর মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য হচ্ছে দুই শিশু হত্যা। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তিন বছরের একটি মেয়েশিশুকে শ্বাসরোধে ও বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারী সন্দেহে পুলিশ ওই বাড়িরই দুই ভাড়াটিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্য ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার দোহারে। ১২ বছরের এক কন্যাশিশুকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। কয়েক দিন আগে ঢাকার গুলশানে কর্মরত এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে পুলিশ পরিচয়ে গাড়িতে তুলে নেয় অপরাধীরা এবং গাড়িতে তুলেই বেদম মারধর শুরু করে। এভাবে দেড় ঘণ্টা গাড়ি চলার পর পাঁচ লাখ টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তাঁকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় রাস্তার ওপর ফেলে দেওয়া হয়। রাজধানীতে এ রকম ১০টি চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। তাদের ধরার চেষ্টা চলছে বলে জানানো হয়েছে। জানা যায়, সম্প্রতি ঢাকায় এ ধরনের বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। সেই সঙ্গে আধিপত্য বিস্তার, জমিজমা বা টাকা-পয়সা নিয়ে বিরোধ, ব্যক্তিগত শত্রুতাসহ আরো অনেক কারণেই খুনাখুনি হচ্ছে। রাজনৈতিক হত্যার অভিযোগও রয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের স্বস্তির স্থানটি ক্রমেই উধাও হয়ে যাচ্ছে।

অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ির প্রমাণ তো আমরা প্রতিনিয়ত পাচ্ছি। সংক্রামক রোগের মতো কুরুচি ও কুপ্রবৃত্তির বিস্তার ঘটছে। এ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দ্রুত উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। আমরা আশা করি, পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*