প্রাণের ৭১

রামুর জাহাজ ভাসা অনুষ্ঠানে আনন্দে ভাসছে বৌদ্ধরা

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে কক্সবাজারের রামুর বাঁকখালী নদীতে ঐতিহ্যবাহী জাহাজ ভাসার আনন্দে ভাসছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়। সেই সাথে গত দু’দিন ধরে ফানুসের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে বৌদ্ধ পল্লীর সান্ধ্যকালীন আকাশ।

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে এ বছর দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষ দিন বৃহস্পতিবার রামু বৌদ্ধ ঐতিহ্য ও পুরাকীর্তি সংরক্ষণ পরিষদ বাঁকখালী নদীতে আয়োজন করে ঐতিহ্যবাহী জাহাজ ভাসা অনুষ্ঠান। মূলত এ উৎসব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের হলেও ফি বছরের মতো জাতি ধর্ম নির্বিশেষে এবং দেশি-বিদেশি পর্যটকদের অংশগ্রহণে উৎসবস্থল সাম্প্রদায়িক মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।

গতকাল ভর দুপুর থেকেই বাঁকখালী নদী তীরের অনুষ্ঠানস্থলে দলে দলে লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে। দেখা যায়, সিংহ, ঘোড়া ও ময়ূর ভাসছে পানিতে। এমন কি আকাশ ছাড়িয়ে পানিতে ভাসছে পাখিও। বাঁশ, বেত ও কাঠ দিয়ে এসব প্রাণীর আকৃতিতে কাগুজে নৌকা বানিয়ে ভাসানো হয় পানিতে।

এ ছাড়াও ২৮ বুদ্ধের আসন এবং বৌদ্ধ প্যাগোডার আকৃতিতেও দৃষ্টিকল্প জাহাজ তৈরি করা হয়। এসব জাহাজে চলছে বৌদ্ধ শিশু-কিশোর ও যুবকদের বাঁধভাঙা আনন্দ। নানা বাদ্য বাজিয়ে শিশু-কিশোরের দল গাইছে আর নাচছে। কাগুজে জাহাজগুলো নদীতে ভাসতে ভাসতে নদীর এপার থেকে ওপারে যাচ্ছে। মাইকে বাজছে-বুদ্ধ কীর্তন-‘বুদ্ধ,ধর্ম, সংঘের নাম সবাই বলো রে’ বুদ্ধের মতো এমন দয়াল আর নাইরে’।

রামুর মবাঁকখালী নদীর চেরাংঘাটের পানিতে ভাসমান পাঁচ-ছয়টি নৌকার উপর বসানো হয় এক-একটি কল্প জাহাজ। রঙ-বেরঙয়ের কাগজে আকর্ষণীয় নির্মাণ শৈলীর কারণে খুব সহজেই মানুষের দৃষ্টি কাড়ছে এসব জাহাজ। প্রতিটি জাহাজেই বাজছে একাধিক মাইক, ক্যাসেট প্লেয়ার। ঢোল, কাঁসর, মন্দিরাসহ নানা বাদ্যের তালে তালে জাহাজে শিশু কিশোর ও যুবকেরা মেতে ওঠেছে এক অন্য রকম আনন্দে।

জাহাজ ভাসা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন ও বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহিদুর রহমান। অনুষ্ঠানে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফর রহমান, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্তভূষণ বড়ুয়া, রামু বৌদ্ধ ঐহিত্য ও পুরাকীর্তি সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু এবং সাধারণ সম্পাদক কেতন বড়ুয়া বক্তৃতা করেন।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*