প্রধানমন্ত্রী ৭ নভেম্বর পুনরায় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসবেন
আগামী ৭ নভেম্বর ১৪ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে পুনরায় সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আজ রাতে গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের সভা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘৭ নভেম্বর সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। ’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সংলাপের ব্যাপারে তিনি ড. কামাল হোসেনের কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন এবং তা তিনি আজ একনেক সভার সময় প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেছেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের নেত্রী সংলাপে সম্মত হয়েছেন। তিনি এর আগেই বলেছেন তার দরজা সবসময় সকলের জন্য খোলা।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৭ নভেম্বরের পর আর কারোর সঙ্গে সংলাপের সুযোগ থাকবে না। এ সময়ের মধ্যে আমরা সকলের সঙ্গে সংলাপ শেষ করে নেব। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৮৫টি রাজনৈতিক দল আমাদের সঙ্গে সংলাপে বসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৪ দল ইতোমধ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপ করেছে।
তিনি বলেন, আগামীকাল জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ইসলামিক দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। যথাসম্ভব ৭ নভেম্বরের মধ্যে আমরা সংলাপ শেষ করে নেব।
প্যারোলে খালেদা জিয়ার মুক্তি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নেত্রীকে কেন প্যারোলে মুক্তি দেয়া হবে? খালেদা জিয়ার কেউ কি অসুস্থ অথবা মারা গেছে?
ওবায়দুল কাদের বলেন, যদি বিদেশে চিকিৎসা প্রয়োজন হয় তাহলে খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেয়া যেতে পারে। খালেদা জিয়ার যদি বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তাহলে ঐক্যফ্রন্ট এ ব্যাপারে আবেদন করতে পারে এবং বিএনপি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করতে পারে। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করণীয় নেই।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন করেন বিএনপি নেত্রীকে কিভাবে প্যারোলে মুক্তি দেয়া যাবে। এটা কি নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য…এটা কি আইনে আছে? তিনি আরো বলেন, এ ব্যাপারে বিএনপি এখনো আবেদন করেনি।
১৪ দলীয় জোটের শরীকদের মধ্যে আসন বন্টন নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী ১৪ দলের নেতাদের জানিয়েছেন, নির্বাচনের বিজয়ের জন্য জোট প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছেন, প্রতিটি আসনে ১৪ দলের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য বিজয়ী প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে।
তিনি বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনে আমরা সম্মিলিতভাবে লড়াই করবো। যেকোনো পরিস্থিতি আমরা একসঙ্গে মোকাবেলা করবো।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যদি কোন অশুভ শক্তি নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা চালায় ১৪ দলীয় জোট সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করবে।
১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, তাদের জোটের শরীকরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নেবে। ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আসন বণ্টনে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ১৪ দলীয় জোট নেতৃবৃন্দ শেখ হাসিনাকে সকল কর্তৃত্ব প্রদান করেছেন।
নাসিম আরো বলেন, সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।
গত বৃহস্পতিবার গণভবনে আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে ১৪ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়। এতে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ দলীয় জোটের ২৩ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। অন্যদিকে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ২০ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
শুক্রবার গণভবনে ১৪ দলীয় জোট ও ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।