প্রাণের ৭১

ঐক্যফ্রন্টে ‘ক্যু’: কামাল আউট, তারেক ইন

রাতের অন্ধকারেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব ছিনতাই হলো। ড. কামাল হোসেনকে হটিয়ে ফ্রন্টের মূল নেতা হিসেবে আবির্ভূত হলেন তারেক জিয়া। লন্ডন থেকে জানিয়ে দিলেন, ২০ দল এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে কারা কারা কারা নির্বাচন করবে, তা চূড়ান্ত করবেন তিনিই। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে জানিয়ে দিলেন, ২০ দলের শরিক এবং ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন চাহিদার তালিকা যেন তাঁকে দেওয়া হয়। এই তালিকা থেকে তারেক জিয়াই ঠিক করবেন ২০ দল এবং ঐক্যফ্রন্টের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা। অথচ, দুদিন আগেই সিদ্ধান্ত ছিল অন্যরকম। মাতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সবাই একমত হয়েছিল যে, শরিকদের আসন বণ্টন চূড়ান্ত হবে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে। ঐক্যফ্রন্টকে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক দেওয়ার ঘোষণার পরপরই পাল্টে যেত থাকে দৃশ্যপট। পর্দার আড়াল থেকে বেরিয়ে আসেন তারেক জিয়া। শরিকদের অন্তত দুই নেতাকে তিনি বাগে আনেন। তারেক জিয়ার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবার পর, গতরাতে ঐক্যফ্রন্টের সভায় বিএনপির পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়, মনোনয়ন চূড়ান্ত করবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এসময় গণফোরাম ছাড়া ঐক্যফ্রন্টের কোনো শরিকই এর প্রতিবাদ করেননি। গতরাতেই এটা নিশ্চিত হয়ে গেছে যে, শেষ পর্যন্ত যদি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জয়ী হয়, তাহলে যেই প্রধানমন্ত্রী হোক আসল নেতা হবেন তারেক জিয়া।

ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে জয়ী হলে ঐ সরকারের প্রথম কাজ হবে তারেককে দেশে ফেরানো।, তাঁর মামলা প্রত্যাহার এবং তাঁকে প্রধানমন্ত্রী বানানো। এই কাজ সম্পন্ন হলেই ঐক্যফ্রন্টকে ‘গলা ধাক্কা’ দেওয়া হবে বলেই মন্তব্য করছেন বিএনপির অনেক নেতা। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের মূল আপত্তির জায়গা ছিল তারেক জিয়া। তারেক জিয়ার নেতৃত্বে নির্বাচন করলে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত হাওয়া ভবনের দুর্নীতি সামনে আসবে। তারেক এবং তাঁর বন্ধুদের অপকর্মের চর্চা হবে। এই প্রেক্ষাপটেই ড. কামাল হোসেনকে সামনে আনা হয়। সবাইকে দেখানো হয়, তারেক এবং জিয়া পরিবারের অধ্যায় শেষ। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নতুন বিএনপি আত্মপ্রকাশ করেছে। যে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে। কিন্তু দলের কর্তৃত্ব জিয়া পরিবারের বাইরে যাওয়ার আগেই, নেতৃত্ব নিয়ে নিলেন তারেক জিয়া। এখন তাঁর নির্দেশেই চলবে ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, ‘টাকা দিয়েই আমরা ড. কামাল কিনেছি। কাজেই তিনি তারেক জিয়ার নির্দেশেই কাজ করবেন।’ যদিও বাইরে ড. কামাল নীরব, কিন্তু ভিতরে তিনিও লজ্জায় পড়েছেন। কারণ, আংকেল থেকে তারেক এখনই তাকে কামাল সাহেব ডাকতে শুরু করেছেন।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*