নির্বাচন বর্জনের কথাও ভাবছে বিএনপি
বিএনপি বার বার একটি কথা বলছে, কোনো অবস্থাতেই মাঠ ছাড়া যাবে না। নির্বাচন বর্জন করা যাবে না। তিনদিন ধরে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। এই সাক্ষাৎকারে তারেক জিয়া যে নির্দেশনা দিচ্ছেন, তার মূলকথা হলো, যাঁকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে, তাঁর পক্ষেই দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। মাটি কামড়ে নির্বাচনে থাকতে হবে, মাঠ ছাড়া যাবে না।’ শুধু তারেক জিয়াই নয়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড.কামাল হোসেনও অন্তত তিনটি বক্তৃতায় বলেছেন নির্বাচন বর্জন করা যাবে না। যে কোনো মূল্যে ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে হবে।‘ বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট তাদের নির্বাচনী এলাকায় প্রচারে বর্জন ইস্যুকে প্রাধান্য দিচ্ছে। কিন্তু বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, বিএনপির পরিকল্পনায় এখনো বর্জনের চিন্তা আছে। নির্বাচন বর্জন করে যদি পুরো নির্বাচন ভণ্ডুল করে দেওয়া যায়, তাহলে বিএনপি বর্জনের পথেই হাঁটতে পারে। গত দুই দিনে ড. কামাল হোসেন এবং বিএনপি মহাসচিব দুজনই বলেছেন, নির্বাচনের নূন্যতম পরিবেশ নেই। ড. কামাল ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে বলেছেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’ বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যদি নিরপেক্ষ নির্বাচনের নূন্যতম সম্ভাবনা না হয়, সেক্ষেত্রে বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিতে পারে।’ বিএনপির একজন নেতা বলেছেন,‘এরকম ঘোষণা দিলে আমরা সর্বাত্মক আন্দোলন করবো। এখন নির্বাচন করতে না দেওয়াই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’ বিএনপির আরেক নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন,‘ বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে যাক, এটাই সরকারের মাস্টার প্লান। শেষ পর্যন্ত যদি আওয়ামী লীগের স্বেচ্ছাচারিতায় আমাদের নির্বাচন বর্জন করতে হয়, তাহলে বাংলাদেশে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। সেই শক্তি এখন আমাদের আছে।’ বিভিন্ন সূত্রে খবরে জানা গেছে, যারা বিএনপির টিকেট পাবেন, তাদের কাছ থেকে প্রত্যাহার সংক্রান্ত কাগজেও স্বাক্ষর নিয়ে রাখা হবে। বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বর্জন করে তখন যেন তারা নির্বাচন করতে না পারে। বিএনপির ঐ সূত্রগুলো বলছে, বেশ কয়েকটি কারণে বিএনপি নির্বাচন বর্জনের পথে হাঁটতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে-
১. বেগম খালেদা জিয়াকে যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া হয়।
২. মামলা এবং দণ্ডের কারণে যদি বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য হন।
৩. নির্বাচন কমিশনের আচরণ যদি তাদের কাছে পক্ষপাতপূর্ণ মনে হয়।
৪. পলাতক নেতাকর্মীদের যদি ধরপাকড় বন্ধ না হয়।
৫. বিএনপির নেতাকর্মীদের যদি গ্রেপ্তার অব্যাহত থাকে।
বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, ‘মনোনয়ন পত্র দাখিল থেকে প্রত্যাহার সময়টুক গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ের মধ্যেই নির্বাচনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি।