প্রেমে বাধা দেয়ায় শিক্ষকের হাতে ছাত্রীর মা খুন
বাসায় পড়াতে গিয়ে ছাত্রীর উপর কুনজর পড়ে গৃহশিক্ষকের। বিষয়টি বুঝতে পেরে পড়াতে বারণ করে দেন মা শাহানা বেগম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহানা বেগমকে (৩৫) কুপিয়ে হত্যা করে গৃহশিক্ষক শাহজাহান। ঘটনাটি ঘটে নগরের আকবর থানা সংলগ্ন বিশ্বকলোনির পাশে।
পুলিশ-প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মিরসরাইয়ের বাসিন্দা শাহজাহান ৪ মাস আগে বিশ্বকলোনি এলাকার জসিমের মেয়ে তানজিলাকে পড়ানোর দায়িত্ব পান। পড়ানোর একপর্যায়ে দশম শ্রেণীর ছাত্রী তানজিলার প্রতি কুনজর পড়ে গৃহশিক্ষক শাহজাহানের।
এ ঘটনা বুঝতে পেরে দুমাস আগে গৃহশিক্ষককে বাসায় পড়াতে আসতে বারণ করে দেন তানজিলার মা শাহানা বেগম। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রী, ছাত্রীরা বাবা-মাকে ফোনে হুমকি ও নানা ছুতোনাতায় বিরক্ত করতে থাকেন।
মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে একমাসের বেতন বকেয়া আছে সেই অজুহাতে গৃহশিক্ষক শাহজাহান বিশ্বকলোনিতে গিয়ে ছাত্রীর বাবা জসিমের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় এবং একপর্যায়ে জসিম ও তার ভাইকে কুপিয়ে আহত করে। তাদের রক্ষায় শাহানা বেগম এগিয়ে এলে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে পালনোর সময় এলাকাবাসী গৃহশিক্ষক শাহজাহানকে ধরে আকবর শাহ থানায় সোপর্দ করে।
গুরুতর আহত শাহানা বেগমকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত জসিম ও ছাত্রীর চাচা চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
সিএমপির আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন বলেন, ‘ঘাতক শাহজাহান নিহতের মেয়েকে বাসায় এসে পড়াতো। এই সুযোগে ছাত্রীর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি পারিবারে জানাজানি হলে তাকে গৃহশিক্ষক থেকে বাদ দেওয়া হয়, এবং শাহজাহানকে তাদের বাসায় আসতে নিষেধ করা হয়। কিন্তু শাহজাহান নিষেধ অমান্য করে তাদের বাসায় আসলে নিহতের স্বামী তাকে মারধর করে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে শাহজাহান শাহীনাকে কুপিয়ে হত্যা করে।’
আকবর শাহ থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘দশম শ্রেণিতে পড়া মেয়েকে পড়াতেন স্থানীয় শাহজাহান। জিজ্ঞাসাবাদে শাহজাহান জানান, তিনি প্রথমে ছাত্রীকে প্রেম প্রস্তাব দেন। ছাত্রী প্রত্যাখান করলে শাহজাহান তার বাবা মা জসিম উদ্দিন ও শাহীনা বেগমের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তারাও ক্ষুব্ধ হয়ে শাহজাহানকে বাসায় আসতে মানা করেন।’
তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় শাহজাহান আবারও ছাত্রীর বাসায় গেলে মা শাহীনার সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে শাহজাহান দা দিয়ে শাহীনাকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। জসিম ও তার ছোট ভাই শাহীনাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে শাহজাহান তাদেরকেও কুপিয়ে আহত করে। তবে জসিম ও তার ভাইয়ের আঘাত গুরুতর নয়।’