বুধবার বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন শেখ হাসিনা
আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী বুধবার টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করবেন।
আজ দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, এমপি একথা জানান।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত নাশকতা করার পাঁয়তারা করছে বলে উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত অগণতান্ত্রিক পন্থায় পরিচালিত হয় এবং মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় ব্যাপক বাণিজ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ অনুযায়ী, লন্ডনে পলাতক তারেক রহমান এই মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন। তাহলে বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্যে কত টাকা দেশ থেকে পাচার হয়েছে? আর এ বিশাল অংকের টাকা আগামী নির্বাচনে ব্যবহৃত হলে তা একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে’-বলেন নানক।
আগামী নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে নাশকতার পাঁয়তারা করছে বলে উল্লেখ করে নানক বলেন, নির্বাচনে বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে। নির্বাচন কমিশনের উচিত তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া।
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ বিএনপি-জামায়াত অপশক্তির ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে ব্যালটের মাধ্যমে আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীদের বিরুদ্ধে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মদদদাতা বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে রায় দেবে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণ রায় দেবে।
নানক বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা মনোনয়ন বাণিজ্যের প্রতিবাদে তাদের চেয়ারপারসনের কার্যালয় ও কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিওে রেখেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতাদের অপদস্থ করা হয়েছে এবং দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করতে দেখা গেছে।
জাহাঙ্গীর কবির নানক আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আন্তর্জাতিকভাবে চিহ্নিত সন্ত্রাসী সংগঠন শিবিরের কয়েকজন নেতা আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমাসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে। এ থেকে বোঝা যায় বিএনপি এবং জামায়াত নাশকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে। তারপরও আমরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আছি।
এক প্রশ্নের জবাবে নানক বলেন, আওয়ামী লীগের কোন বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। যারা স্বতন্ত্র দাঁড়িয়েছিল তারা প্রায় সবাই তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পর আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করা হবে বলেও তিনি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক ও ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।
বাসসের গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গোপালগঞ্জের কোটালী পাড়ায় উপজেলা পরিষদ হল রুমে আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এসএসএফ’র উপস্থিতিতে সমন্নয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইদুর রহমান খান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খান, কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার, পৌর মেয়র মো. কামাল হোসেন শেখ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমানসহ এসএসএফ’র কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার জানান, আগামী বুধবার দুপুর আড়াইটায় স্থানীয় শেখ লুৎফর রহমান রহমান আদর্শ সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষন দেবেন।
তিনি জানান, এই জনসভাকে সফল করতে দলীয়ভাবে সব প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে।