আরো এক সৌদি তরুণী পালিয়ে ছিল।
গত এক সপ্তাহ ধরে বিশ্বের মনযোগের অন্যতম কেন্দ্রে সৌদি আরব থেকে পালিয়ে আসা রাহাফ আল-কুনুন। নিজের ধর্ম ইসলাম ত্যাগ করায় পরিবারের সদস্যরা তার ওপর নির্যাতন চালাতো বলে ১৮ বছর বয়সী রাহাফের অভিযোগ। সৌদি আরবে নারীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ অনেক আগে থেকেই। তবে ধীরে ধীরে সেটা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। এর আগে সালওয়া নামের এক মেয়েও দেশ ছেড়েছিলেন কেবল ভালভাবে বাঁচার জন্য। সঙ্গে ছিল তার বোন।
আট মাস আগে জন্মভূমি সৌদি আরব ছেড়ে পালানো মেয়েটির নাম সালওয়া। তার বয়স ২৪ বছর। তিনি এখন কানাডার মন্ট্রিলে বাস করছেন। ১৯ বছর বয়সী বোনও তার সঙ্গে পালিয়েছিলেন। সালওয়া তার পালানোর গল্প শুনিয়েছেন সাংবাদিকদের। তিনি জানান, ছয় বছর ধরে আমি ও আমার বোন পালানোর পরিকল্পনা করি। কিন্তু এজন্য দরকার ছিল পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র। সৌদির নীতি অনুযায়ী এসব নিতে পুরুষ সদস্যদের অনুমতি লাগে।
সালওয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কারণে আমার জাতীয় পরিচয়পত্র ছিল। দুই বছর আগে একটি ইংরেজি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কারণে আমার কাছে পাসপোর্টও ছিল। তবে এগুলো আমার পরিবার নিয়ে নিয়েছিল। ফলে সেটা আমার কাছে আনা প্রয়োজন ছিল। আমি আমার ভাইয়ের বাসার চাবি চুরি করে সেগুলো নিজের কাছে নিয়ে আসি। আমি বাবার ফোন চুরি করি এবং লগডইন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে নম্বর পরিবর্তন করি। এর মাধ্যমে অভিভাবকদের সম্মতি আদায় করি। ফলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় কোনো আপত্তি করেনি। পরিবারের সবাই যখন ঘুমিয়ে ছিল তখন আমরা দুই বোন বাড়ি ত্যাগ করি। ট্যাক্সি ক্যাব নিয়ে বিমানবন্দরে যাই। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে এসএমএস আসে। তবে সেগুলো আমার নম্বরে আসে। কারণ বাবার নম্বরের স্থলে আমার নম্বর দিয়েছিলাম। এরপর আমরা জার্মানিতে পৌছে যাই। যদিও মানবাধিকারের জন্য খ্যাতি পাওয়ায় আমরা কানাডায় আশ্রয় নিই। তার মতে, সৌদি আরবে নারীদের কোনো স্বাধীনতা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসে সারাদিন বাসায় বসে থাকতে হতো। নামাজ পড়া ও রোজা রাখতে বাধ্য করা হতো। অন্যদিকে রাহাফ আল-কুনুনকেও আশ্রয় দিয়েছে কানাডা। থাইল্যান্ডে পালিয়ে এসেছিল রাহাফ। পরে কানাডা তাকে আশ্রয় দেওয়ার কথা জানায়। – বিবিসি