প্রাণের ৭১

ছয় ঘণ্টার কম ঘুমালে যেসব ক্ষতি হতে পারে

৬ ঘণ্টার কম সময় ঘুমালে শরীরের একাধিক ক্ষতি হয়। আর এই পরিস্থিতি দীর্ঘদিন চলতে থাকলে এক সময়ে তা মানুষের আয়ুর ওপর প্রভাব ফেলে। একাধিক গবেষণায় বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ৬ ঘণ্টা বা তার কম সময় ঘুমালে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ওবেসিটি এবং কোলেস্টেরল বৃদ্ধির মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ৬ ঘণ্টার কম ঘুমালে বা বারবার ঘুমের মধ্যে জেগে যাওয়ার কারণে ধমনীতে এক ধরনের চর্বিজাতীয় প্রাচীর তৈরির আশঙ্কা সৃষ্টি করে। আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলোজি জার্নালে সোমবার প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্রটি।

গবেষণা দলের প্রধান এবং জিন মায়ার ইউএসডিএ হিউম্যান নিউট্রিশন বিভাগের পরিচালক হোসে অরদোভাস বলেন, ‘আগের গবেষণাগুলোতে এই ধরনের কম ঘুমের জন্য সরাসরি করোনারি হূদরোগ সৃষ্টির কথা বলা হতো। কিন্তু সাম্প্রতিক এই গবেষণায় জানা গেছে, কম ঘুম সরাসরি হার্টের ওপর নয় বরং তা শরীরে অ্যাথারোক্লেরোসিস সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে।’

অ্যাথারোক্লেরোসিস এমন একটি রোগ যেখানে শরীরের ধমনীর মধ্যে প্রাচীর তৈরি করে। সাধারণত চর্বি, কোলেস্টেরল, ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য উপাদানের সমন্বয়ে ধমনীর মধ্যে এই প্রাচীর তৈরি হয়। মূলত হার্ট থেকে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত শরীরের বিভিন্ন অংশে

পরিবহনের কাজ করে এই ধমনী। তাই ৬ ঘণ্টার কম ঘুমানোর ফলে বিজ্ঞানীরা ধমনীতে যে প্রাচীর তৈরি হওয়ার আশঙ্কার কথা বলছেন, সেটি মানুষের জীবনের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি ডেকে আনতে পারে। এই ধরনের প্রাচীরের কারণে ধমনী আগের তুলনায় অনেকটাই সঙ্কুচিত হয়ে যাবে যা রক্ত সঞ্চালনের বাধার সৃষ্টি করবে।

তিনি আরো জানান, ধমনীতে প্রাচীর তৈরির ফলে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি হলে তা স্ট্রোক, হজমে সমস্যা, স্থূলতা, ব্যাথা এমনকি হূদরোগ পর্যন্ত হতে পারে।

গবেষণার জন্য দলটি স্পেনের চার হাজার নারী-পুরুষের জরিপ চালায়, এদের প্রত্যেকের বয়স ছিল গড়ে ৪৬ বছর। এদের কারোরই হূদরোগের কোন ইতিহাস ছিল না। রাতে ঘুমানোর আগে এদের প্রত্যেকের শরীরে লাগানো হয় আর্টিগ্রাফ নামের একটি ছোট্ট যন্ত্র, যেটি প্রত্যেকের ঘুমের দৈর্ঘ্য, ঘুমের প্রকৃতির তথ্য সংগ্রহ করে। পরপর সাত রাত ধরে তাদের ওপর এই জরিপ চালানো হয়। ঘুমের মধ্যে কে কতবার ওঠে বা কেমন নড়াচড়া করে সেসব তথ্যও সংগ্রহ করা হয়।

ড. ড্যানিয়েল গোটিলিয়েব এবং ড. দিপক ভাট বলেন, ঘুমের দৈর্ঘ্য, প্রকৃতির ওপর এই লোকদের চারটি গ্রুপে বিভক্ত করা হয়। একই সাথে প্রত্যেকের সিটি স্ক্যান এবং গবেষণার শুরুতে এবং শেষে তাদের হার্টের থ্রিডি আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়। এই সকল বিষয়ের তথ্য পর্যালোচনা করেই মূলত এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন গবেষকরা যে, ৬ ঘণ্টার কম ঘুমের কারণে তা ধমনীতে প্রাচীর তৈরিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।-সিএনএন






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*