মাস্টারকার্ডকে ৫৭ কোটি ইউরো জরিমানা
ক্রেডিট কার্ড সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান মাস্টারকার্ডকে ৫৭ কোটি ইউরো জরিমানা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। পণ্য ক্রয়ে ক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতাদের (রিটেইলার) স্বল্পতর পেমেন্ট ফি’র সুবিধা আটকে রাখার পুরনো নীতির জন্য প্রতিষ্ঠানটির এ জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান কমিশন।
ইউরোপিয়ান কমিশন জানিয়েছে, মাস্টারকার্ডের কার্যক্রমের কারণে ইউরোপের ক্রেতা ও বিক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০১৫ সালের আগ পর্যন্ত মাস্টারকার্ডের নিয়ম অনুযায়ী, খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো সংশ্লিষ্ট দেশের ব্যাংক ফি’র হারে পেমেন্ট দিতে বাধ্য হয়েছে। স্বল্পতর হারের ব্যাংক ফি আছে, ইউরোপের এমন দেশগুলোয় লেনদেনের ক্ষেত্রেও সেখানকার হারের বদলে নিজ দেশে বিদ্যমান ব্যাংক রেট দিতে হয়েছে।
ইইউ’র প্রতিযোগিতাবিষয়ক কমিশনার মারগ্রেথ ভেস্তাগার বলেন, ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ব্যাংকগুলোর দেয়া স্বল্প রেটে কেনাকাটা করতে ক্রেতাদের নিরুৎসাহিত করায় মাস্টারকার্ডের নীতি কৃত্রিমভাবে কার্ড পেমেন্টের খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে ইইউ’র ভোক্তা আর বিক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
একজন ক্রেতা যখন একটি দোকানে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করেন, তখন ওই দোকানের ব্যাংক কার্ডহোল্ডারের ব্যাংকে একটি ফি প্রদান করেন। প্রতিষ্ঠান তখন তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তাদের ওই দোকানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ফি পাঠিয়ে দেয়, যা শেষমেশ ক্রেতার খরচ বাড়িয়ে দেয়। ২০১৫ সালের আগ পর্যন্ত এই লেনদেন ফি (ইন্টারচেঞ্জ ফি) ইউরোপজুড়ে স্থানভেদে নানারকম ছিল। কিন্তু সেসময় মাস্টারকার্ডের যে নিয়ম বহাল ছিল, সে অনুযায়ী যে ব্যাংক কার্ড পেমেন্ট গ্রহণ করছে সেই ব্যাংকের উৎস দেশের বিদ্যমান হার ফিতে চার্জ প্রযোজ্য হতো। এর ফলে ভোক্তা ও বিক্রেতাদের জন্য পণ্যের মূল্য বেড়ে যেত। ব্যহত হতো ইউরোপের বাজারে আন্তঃসীমান্ত প্রতিযোগিতা। আর তা অভিন্ন বাজারে কৃত্রিমভাবে শ্রেণিকরণ তৈরি করে বলে মনে করেন ইইউ কমিশনার।
কমিশন জরিমানার সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করে বলেছে, কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, মাস্টারকার্ডের নিয়মের ফলে বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো স্বল্প ফি থেকে মুনাফা করতে পারেনি। এটি ইইউ ব্লকের দেশগুলোর বাজারে প্রতিযোগিতাকে সীমিত করেছে।
তবে সবমিলে জরিমানার অঙ্ক আরও বেশি হওয়ার কথা থাকলেও মাস্টারকার্ডের সহযোগিতাপূর্ণ আচরণের কারণে জরিমানা ১০ শতাংশ লাঘব করেছে ব্রাসেলস।