যে নারীর ‘মল’ দিয়ে হয় রোগীর চিকিৎসা!
রোগীকে রক্তদান, চোখ ও কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গদানের কথা শুনলেও ‘মল’ দানের আজব কথা কেউ শুনেছেন কী?
এমনি এক অদ্ভুত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ক্লডিয়া ক্যাম্পেনেলা। খবর বিবিসির।
ক্লডিয়ার বয়স ৩১। তিনি এটাকে রক্তদানের মতই স্বাভাবিক ব্যাপার বলে মনে করেন।
বিজ্ঞানীরা একে বলছেন, ‘সুপার পু’ (super poo) -যার মধ্যে ভালো ব্যাকটিরিয়ার চমৎকার সমন্বয় ঘটেছে। এবং ক্লডিয়া হচ্ছেন একজন ‘সুপার ডোনার’ বা দাতা।
বর্তমানে আমরা যে এ্যান্টিবায়োটিক খাই – তা অনেকসময় শরীরের ভালো এবং খারাপ দু’ধরণের ব্যাকটেরিয়াকেই নির্বিচারে মেরে ফেলে।
ব্যাকটেরিয়া নির্মূল হয়ে যাওয়ায় পাকস্থলীতে ‘ক্লস্ট্রিডিয়াম ডিফিসিল’ নামে বিশেষ এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া বংশবৃদ্ধি ঘটাতে থাকে।
এর ফলে এমন ডায়রিয়া হয় যার সঙ্গে রক্তপাত, জ্বর এবং পেট ব্যথা হতে পারে – এবং অনেকক্ষেত্রে এটা এতো গুরুতর হয় যে রোগী মারাও যায়।
এ পরিস্থিতিতে আরও এ্যান্টিবায়োটিক দেয়ার চাইতে ভালো বিকল্প হিসেবে বেরিয়ে এসেছে এই ‘মল প্রতিস্থাপন’ চিকিৎসা।
অর্থাৎ একজন সুস্থ ব্যক্তির মল থেকে ভালো ব্যকটেরিয়াগুলো সংগ্রহ করে তা রোগীর মলদ্বার দিয়ে শরীরে ঢুকিয়ে দেয়া। ক্লডিয়ার মলে নাকি এতো বেশি ভালো ব্যাকটেরিয়া আছে যে তা রীতিমতো বিরল।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে তিনি নিজের মল অন্যদের দান করেন। কারণ ডাক্তাররা বের করেছেন যে ক্লডিয়ার মলে এমন ‘উৎকৃষ্ট মানের ব্যাকটেরিয়া আছে, যা অন্যের দেহে প্রতিস্থাপন করে বিভিন্ন পেটের রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব।
ক্লডিয়া বলেন, আমার অনেক বন্ধু মনে করে এটা একটা জঘন্য এবং উদ্ভট ব্যাপার। কিন্তু এটা আমাকে বিচলিত করে না। এটা দান করা খুবই সহজ এবং আমি চিকিৎসা গবেষণায় অবদান রাখতে পেরে খুশি।
মনে রাখতে হবে ‘মল প্রতিস্থাপন’ কোন জঘন্য ব্যাপার নয়, বরং একটা জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা।
ক্লডিয়া একজন নিরামিষভোজী, আর নিরামিষভোজীরা ভালো মল-দাতা হতে পারেন – এটা জানার পরই তিনি একজন ডোনার হতে আগ্রহী হন।