প্রাণের ৭১

গণধর্ষণ মামলার নিখোঁজ আরেক আসামির গুলিবিদ্ধ লাশ, আবারও চিরকুট! …

পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার মাদ্রাসাছাত্রী গণধর্ষণ মামলার নিখোঁজ আরেক আসামিরও গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেছে। আগের মতো এবারও লাশের গলায় প্লাস্টিকে মোড়া কাগজে চিরকুট পাওয়া গেছে।
আজ শুক্রবার দুপুরে ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার আঙ্গারিয়া গ্রামের পরিত্যক্ত একটি ইটভাটার পাশ থেকে আসামি রাকিব হোসেন মোল্লার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত রাকিব ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ভিটাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়তেন। তিনি ঢাকা জজকোর্টের এক আইনজীবীর সহকারী কালাম মোল্লার ছেলে। পরিবার নিয়ে তিনি ঢাকার মোহাম্মদপুরে থাকেন।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন জানান, আজ দুপুরে আঙ্গারিয়া গ্রামের একটি ইটভাটার পাশে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। রাজাপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাথার দুই পাশে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রাকিবের লাশ উদ্ধার করে। নিহতের বুকে প্লাস্টিকের মোড়ানো সাদা কাগজে লেখা ছিল, ‘আমি পিরজপুর ভানডারিয়ার … ধরষক রাকিব। ধরষকের পরিনতি ইহাই। ধরষকরা সাবধান। হারকিউলিস।’
খবর পেয়ে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া সার্কেল) মো. মোজাম্মেল হক রেজা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ভাণ্ডারিয়া ও রাজাপুর থানা পুলিশ জানায়, গত ১২ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার নদমুলা গ্রামের বাড়ির থেকে পাশের হেতালবুনিয়া এলাকায় নানাবাড়ি বেড়াতে যাওয়ার পথে এক মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে পানের বরজের ভেতর ধর্ষণ করা হয় তাকে। এ মামলায় সজল জমাদ্দার ও রাকিব হোসেন মোল্লাকে আসামি করে ১৪ জানুয়ারি ভাণ্ডারিয়া থানায় একটি মামলা করা হয়। মামলার পর থেকেই সজল জমাদ্দার নিখোঁজ ছিলেন বলে তাঁর পরিবার জানায়। আর রাকিব নিখোঁজ ছিলেন ২৫ জানুয়ারি থেকে।
পরদিন ২৬ জানুয়ারি কাঁঠালিয়া উপজেলার বীণাপাণি গ্রামের একটি মাঠ থেকে আসামি সজল জমাদ্দারের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই লাশের বুকেও প্লাস্টিকে মোড়ানো সাদা কাগজে লেখা ছিল, ‘আমার নাম সযল, আমি ধরসক, ইহাই আমার পরিনতি।’
লাশ উদ্ধারের আগে নিহত রাকিবের বাবা কালাম মোল্লা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন, গত ২৫ জানুয়ারি ঢাকার সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন লোক রাকিবকে তুলে নিয়ে যায়। এর পর থেকে রাকিবের কোনো খোঁজ নেই।
গত ১৭ জানুয়ারি ঠিক একই রকম ঘটনা ঘটেছিল ঢাকার আশুলিয়ায়। ওই দিন আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে তৈরি পোশাক কারখানার নারী শ্রমিককে গণধর্ষণের মামলার মূল আসামি রিপন মিয়ার (৪০) গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ওই লাশের গলায়ও একটি কাগজে লেখা ছিল, ‘আমি ধর্ষণের মূল হোতা।’
আশুলিয়ার খাগান এলাকার আমিন মডেল টাউনের ভেতরের একটি খোলা মাঠ থেকে রিপনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ইয়োগি লিমিটেড কারখানা থেকে কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন এক নারী শ্রমিক। এ সময় পাঁচ বখাটে তাঁকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে কারখানার পেছনে একটি মাঠে গণধর্ষণ করে। পরের দিন ৬ জানুয়ারি ওই নারী শ্রমিক মারা যান। একদিন পর ৭ জানুয়ারি নারী শ্রমিকের বাবা ইয়োগি বাংলাদেশ লিমিটেড কারখানার লাইন চিফ রিপন মিয়াকে প্রধান আসামি করে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন।
পরে চিরকুটসহ আসামি রিপন মিয়ার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*