মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ
ফেনীর সোনাগাজীতে পরীক্ষাকেন্দ্রে কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া শিক্ষার্থীর নুসরাত জাহান রাফির দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি তার চিকিৎসা সব ব্যয়ভার সরকার বহন করবে।
রোববার (৭ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন এসব কথা জানান। এদিন বেলা ১২টায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করতে যান।
ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, পরীক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষার্থীকে আগুনে পোড়ানোর ঘটনায় মর্মাহত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি ওই ছাত্রীর চিকিৎসা ব্যয় সরকার বহন করবে বলে জানিয়েছেন।
এর আগে, সকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মেয়েটির শ্বাসনালীসহ শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তার অবস্থা ক্রিটিক্যাল। তার ব্যাপারে চিকিৎসকরা এখনও কিছু বলতে পারছে না। মেয়েটির চিকিৎসা চলছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি।
এদিকে ওই ছাত্রীর চিকিৎসায় ৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডে রয়েছেন বার্ন ইউনিটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জাতীয় সমন্বয়ক অধ্যাপক সামন্ত লাল সেন, অধ্যাপক আবুল কালাম, অধ্যাপক রাইহানা আউয়াল, অধ্যাপক নওয়াজেশ খান, অধ্যাপক লুৎফর কাদের, অধ্যাপক বিধান সরকার, অধ্যাপক মহিউদ্দিন, ডাক্তার জাহাঙ্গীর আলম ও জহিরুল ইসলাম।
এর আগে, শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি নামে ওই ছাত্রী। মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে রাফি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান।
সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচ ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
এর আগে গত ২৭ এপ্রিল ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।
এদিকে এ ঘটনায় রোববার থেকে আগামী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত মাদরাসার স্বাভাবিক কার্যক্রম ও অনির্দিষ্টকালের জন্য হোস্টেল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।