হালদায় ইঞ্জিন নৌকার পাখার আঘাতে মৃত মা মাছ।
প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন ক্ষেত্র হালদায় রুই জাতীয় মাছের ডিম ছাড়ার সময় সন্নিকটে। এমন সময়ও তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে অবাধে ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল করছে। আর সে নৌকার পাখার আঘাতে মারা যাচ্ছে ৮ কেজি, ১২ কেজি ওজনের ডিমধারী মা মাছ। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছে মাছের উৎপাদন।
সামনের অমাবস্যা বা পূর্ণিমার তিথিতে অনুকূল পরিবেশে ডিম ছাড়বে মা মাছ। ইতিমধ্যে হালদার উভয় পাড়ের শত ডিম সংগ্রহকারীরা প্রস্তুত রয়েছেন ডিম উৎসবের অপেক্ষায়। এরইমধ্যে আঘাতজনিত কারণে হালদার বুকে মরে পঁচে ভেসে উঠলো একটি বড় আকৃতির মৃগেল মা মাছ।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাউজান উপজেলার খলিফার ঘোনায় স্থানীয় জেলেরা এই মৃত মা মাছটি দেখতে পায়। এই সময় মা মাছ মরে যাওয়াকে অশনি সংকেত বলে মনে করছেন হালদা বিশেষজ্ঞরা।
হালদা বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে হালদার খলিফা ঘোনা এলাকায় মৃত মা মাছ উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে মাছটিকে হাটহাজারীর গড়দুয়ারায় নিয়ে আসা হয়। সংবাদ পেয়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয় হতে সেখানে উপস্থিত হই। মৃত মা মাছটি হলো মৃগেল মাছ। যার ওজন প্রায় ৮ কেজি এবং দৈর্ঘ্য ৩৩ ইঞ্চি। মাছটির ঘাড়ে ড্রেজার বা ইঞ্জিন চালিত নৌকার পাখার আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে গতরাতে ( সোমবার দিবাগত রাত) নৌকার পাখার আঘাতে মাছটি মারা গেছে। পরে মাছটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে আনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু, মাছটি পঁচে দূর্গন্ধ ছড়ানোর কারণে সেখানে সেটিকে মাটি চাপা দেওয়া হয়।’
তিনি আক্ষেপ করে আরো বলেন, ‘গত মাসের ২০ তারিখের পরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পের ইঞ্জিন চালিত নৌকা চলাচলের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও আজও (মঙ্গলবার) আমাদের সামনের বড় বড় নৌকা চলাচল করছে। দুই একদিনের মধ্যে ডিম ছাড়বে মা মাছ। এরই মধ্যে এসব নৌ চালাচল বন্ধ করা না গেলে হালদা রক্ষায় আমাদের কোন পদক্ষেপ কাজে আসবে না। হালদা হারাবে তার ঐতিহ্য।’
উল্লেখ্য, গত ৫ মার্চ দুটি মৃত মা মাছ উদ্ধার করা হয়েছিল। এদের মধ্যে একটি ছিল ১২ কেজি ওজনের কাতলা অপরটি ৩ কেজি ওজনের আইড় মাছ।