ঘটনাস্থলে নুসরাত হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন সহপাঠী মনি
ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সরাসরি অংশ নেওয়া সহপাঠী কামরুন নাহার মনি ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) কামরুন নাহার মনিকে নিয়ে ঘটনাস্থল ও বোরকার দোকান পরিদর্শন করেছে পিবিআই। পিবিআইয়ের দলটি রিমান্ডে থাকা মনিকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে এবং তার নিজ মুখ থেকে বর্ণনা শুনে।
নুসরাত হত্যা মামলার তদন্ত পিবিআই পরিদর্শক মো. শাহ আলম বলেন, নুসরাত হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার কামরুন নাহার মনিকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার দুপুরে পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবালের নেতৃত্বে একটি দল মনিকে নিয়ে সোনাগাজী পৌর শহরের মানিক মিয়া প্লাজায় একটি বোরকার দোকানে গিয়ে দোকান মালিকের সঙ্গে কথা বলে। এ দোকান থেকেই সংগ্রহ করা হয় নুসরাত হত্যায় ব্যবহারিত বোরখাগুলো।
পরে পিবিআইয়ের দলটি সোনাগাজী মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের (সাইক্লোন সেন্টার) ছাদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সেখানে নুসরাতকে কীভাবে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে, তার বিবরণ দেন মনি।
গত ৬ এপ্রিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারীরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে তারা চাপ দেয়। ২৭ মার্চ সিরাজের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা হয়েছিল।
দগ্ধ নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে মারা যান নুসরাত।
এ ঘটনায় সোমবার (৮ এপ্রিল) রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ ৮ জনের মামোল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামালা করেন অগ্নিদগ্ধ রাফির বড়ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত এজহারের ৮ জন গ্রেফতারসহ মোট ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন চারজন। ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদ্রাসা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকেও আটক করেছে পিবিআই।