গুলিতে নিহত সাংবাদিক, ব্রিটেনে বিক্ষোভ।
নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে বৃহস্পতিবার রাতে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হয়েছেন সাংবাদিক লায়রা ম্যাকি (২৯)। প্রথমে তিনি গুলিতে গুরুতর আহত হন।
কিছুক্ষণ পরে মারা যান। গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় পুলিশের ভ্যানের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি।
এই সাংবাদিকের মৃত্যুর জন্য ‘ডিসিডেন্ট’ রিপাবলিকানরা দায়ী বলে দাবি করছে দেশটির পুলিশ।
২০০১ সালের পর এই প্রথম ব্রিটেনে কোনো সাংবাদিক দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় নিহত হলেন বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে, ২০০১ সালে আরমাগ কাউন্টির লুরগানে মার্টিন ও’ হ্যাগান নামের এক সাংবাদিক দায়িত্বরত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
পুলিশ বলছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে ক্রেগান এলাকায় ‘ডিসিডেন্ট’ রিপাবলিকানরা দাঙ্গা বাধায়। সে সময় তারা পুলিশ কর্মকর্তাদের লক্ষ করে গুলি ছুড়ে। আর এ কারণে ওই সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ।
এই মৃত্যুর মধ্য দিয়ে একজন প্রতিভাবান তরুণ সাংবাদিকের করুণ পরিণতি ঘটল।
সম্প্রতি তিনি সমকামিদের প্রসঙ্গ নিয়ে একটি ব্লকপোষ্টের জন্য সুখ্যাতি অর্জন করেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে একের পর এক গাড়ি জ্বালিয়ে দেয় দুষ্কৃতিকারীরা। ছুড়তে থাকে পেট্রল বোমা। সে সময়ই আহত হন লায়রা। এবং কিছুক্ষণ মারা যান।
সাংবাদিক লায়রার জন্ম বেলফাস্টে। একাধিক প্রকাশনা সংস্থার জন্য তিনি কলম ধরেছিলেন। ২০১৬ সালে একটি প্রথম সারির পত্রিকায় ইউরোপের প্রথম ৩০ জন সাংবাদিকের মধ্যে নাম ছিল লায়রা ম্যাকির।
প্রসঙ্গত, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে ৩০ বছরের দীর্ঘ সংঘর্ষের পরে শান্তি চুক্তি হয়। নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ব্রিটেনের অন্তর্ভূক্ত। দেশটির প্রোটেস্ট্যান্টরা চান ব্রিটেনের মধ্যেই থাকুক নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড। কিন্তু ক্যাথলিক আইরিশ জাতীয়তাবাদীরা চান ব্রিটেন থেকে বেরিয়ে এসে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড জুড়ে ইউনাইটেড আয়ারল্যান্ড তৈরি হোক।
‘ডিসিডেন্ট রিপাবলিকান’ বা ‘আইরিশ রিপাবলিকান’রা তাই বর্তমান শান্তি চুক্তিকে সমর্থন করে না। আয়ারল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম দেশ, ‘ইউনাইটেড আইরিশ রিপাবলিক’ হিসেবে গড়ে তুলতে চান তারা। বর্তমানে দ্বীপরাষ্ট্রটি রাজনৈতিকভাবে দ্বিধাবিভক্ত। আয়ারল্যান্ডের বেশির ভাগ অংশ ‘রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড’-এর অধীনে। আর নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ব্রিটেনের অন্তর্ভূক্ত।