প্রাণের ৭১

আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার একাংশ মানসিক বৈকল্যে ভুগছে: ড. ইফতেখারুজ্জামান

আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার একাংশ মানসিক বৈকল্যে ভুগছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

 

রোববার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

 

মানববন্ধন থেকে নুসরাত হত্যাকাণ্ডে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিচার বিভাগীয় তদন্তের আহ্বান জানানো হয়। অপরাধের শিকার পরিবারকে সব প্রকার সহায়তা প্রদান করারও আহ্বান জানায় টিআইবি।

 

মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপদেষ্টা- নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহামম্মদ রফিকুল হাসান, সিভিক এনগেইজমেন্ট বিভাগের পরিচালক ফারহানা ফেরদৌস, অর্থ ও প্রশাসন বিভাগের পরিচালক আব্দুল আহাদ, এফসিএমএ এবং আউটরিচ ও কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মঞ্জুর-ই-আলম।

 

এছাড়াও টিআইবির সদস্য, টিআইবির অনুপ্রেরণায় ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ইয়ুথ এনগেজমেন্ট এন্ড সাপোর্ট (ইয়েস) গ্রুপের সদস্যসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, টিআইবি কর্মী ও নানা শ্রেণি পেশার মানুষ এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

 

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার একাংশ মানসিক বৈকল্যে ভুগছে। তাদের অনেকেই দুর্নীতিগ্রস্থ, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবান্বিত এবং ব্যাপকভাবে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। তারা অপরাধীর পাশে দাঁড়ায়, অপরাধীকে সুরক্ষা দেয় আর যারা অপরাধের শিকার তাদের শুধু অধিকারই হরণ হয় না, নিরাপত্তাহীনতার শিকার হতে হয়।

 

তিনি বলেন, এভাবে একটা স্বাধীন দেশ চলতে পারে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই, প্রতিবাদ জানাই। আমরা মনে করি, যখন অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে- যখন মানুষ জানবে, অপরাধী জানবে, যে অপরাধ করলে, অপরাধীর সঙ্গে যোগসাজশ থাকলে, অপরাধের সুরক্ষা দিলে শাস্তি পেতে হয়, তখনই কিন্তু আমাদের আর পথে নামতে হবে না। বাস্তবে আইনের শাসন আছে এমন একটা দেশই ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বপ্ন।

 

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, যারা নুসরাতকে প্রত্যক্ষভাবে হত্যা করেছে শুধু তারাই এর জন্য দায়ী নয়। এর সঙ্গে পরোক্ষভাবে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একাংশ, রাজনৈতিক ও অন্যান্য স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গসহ আরও অনেকেই জড়িত, যা একধরণের সিন্ডিকেট।

 

তিনি বলেন, আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করি যে, যেখানেই এই ধরণের অপরাধ সংঘটিত হয় সেখানেই এ ধরণের সিন্ডিকেটের উৎপত্তি হয় এবং সেই সিন্ডিকেটের হাত ধরেই এ ধরণের অপরাধের ন্যায় বিচার প্রতিহত হয়। ফলে বিচারহীনতার সংস্কৃতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ঘটছে।

 

নুসরাতের হত্যাকাণ্ড সরকারের জন্য অগ্নিপরীক্ষা মন্তব্য করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দ্রুত বিচার আদালতে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে সরকার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে যে তারা আইনের শাসনে বিশ্বাস করে, তারা বিচারহীনতাকে প্রশ্রয় দেয় না। নুসরাত হত্যার ন্যায়বিচার না হলে আইনের শাসনের প্রতি উপর দেশবাসীর কোনো আস্থা থাকবে না।

 

মানববন্ধন থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নুসরাত হত্যায় জড়িতদের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার ভয় বা করুণার ঊর্ধ্বে উঠে সুষ্ঠু বিচারিক প্রক্রিয়ায় শাস্তির দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার একাংশের দায়িত্ব পালনে কথিত ঘাটতি ও যোগসাজশের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য পুনরায় আহ্বান জানানো হয়।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*