বসন্তের প্রথম দিনে এশিয়ার বৃহত্তম শিমুল বাগানে হাজারও মানুষের ভীড়
নতুন বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের তারিখ একইদিনে হওয়ায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের প্রয়াত সাবেক চেয়ারম্যান ও গাছ প্রেমিক জয়নাল আবেদীনের তৈরি করা শিমুল বাগানে পর্যটকদের আনাগোনা ছিলো চোখের পড়ার মতো। সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত পর্যটকদের আনাগোনায় ব্যস্ত ছিল এ স্থানটি।
শুক্রবার সকালে শিমুল বাগানে গিয়ে দেখা যায়, ভালোবাসা দিবস ও ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন হাজারো মানুষ। শিমুল ফুলের রক্তিম আভার সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পরিবার- পরিজন, স্বামী ও স্ত্রী, বন্ধু- বান্ধব অথবা প্রেমিক প্রেমিকা সবারই আনা গোনা ছিলো এই শিমুল বাগানে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে আগের চেয়ে বাগানের রক্ষণাবেক্ষণেও গুরুত্ব দিয়েছে মালিকপক্ষ। পর্যটকদের বসার জায়গা থেকে শুরু করে স্বাস্থ সম্মত খাবারের ব্যাবস্থা, নিরাপত্তা প্রহরী, ছবি তোলার জন্য ফটোগ্রাফার সবকিছুর ব্যাবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, ২০০৩ সালে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর নিকটবর্তী মানিগাঁও গ্রামে ২ হাজার ৪০০ শতক জমিতে তিন হাজার শিমুল গাছ লাগান জয়নাল আবেদীন। বসন্তকালে শিমুল ফুলের রক্ত লাল পাপড়িগুলোর সৌন্দর্য্য এখানে আসা সমস্ত মানুষের মনকে রাঙিয়ে দেয়। এক দিকে মেঘালয়ের পাহাড় সারির অকৃত্রিম সৌন্দর্য্য, অন্যদিকে রূপবতী যাদুকাটা নদীর তীরে শিমুল বাগানের তিন হাজার গাছে লাল ফুলের সমাহার শরীরে ভালো লাগার শিহরণ ধরিয়ে দেবার জন্য যথেষ্ট।
ঢাকা থেকে আসা তন্নীমা আক্তার বলেন, ফেসবুকে এই শিমুল বাগান অনেকবার দেখেছি। অনেক দিন ধরেই এখানে আসারা ইচ্ছা ছিলো।কর্মব্যাস্ততার কারণে আসা হয়নি। এবার পহেলা ফাল্গুন শুক্রবার হওয়ায় সুজোগ টা মিস করিনি। পুরো পরিবার নিয়ে চলে এসেছি এই অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে। তবে ফেসবুকে যেরকম দেখেছি বাস্তবে তার থেকেও অনেক বেশি সুন্দর এই শিমুল বাগান।এটি আসলেই একটি মন ভালো হয়ে যাওয়ার মত একটি জায়গা।
খালিদ আহমেদ বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী সন্তানসহ এখানে প্রতি ফাল্গুনেই আসি। জায়গাটা আমার অনেক প্রিয়। এবার এখনও ফুলগুলো ভালোভাবে না ফুটেনি তারপরেও সত্যিই জায়গাটা অনেক সুন্দর। যে মানুষটি এ কাজ করে গিয়েছেন তার প্রশংসা করতেই হয়।যারা এর দেখা শুনা করছেন তাদের
বাগানের মালিক জয়নাল আবেদীনের মেয়ে জেলা পরিষদ সদস্য সেলিনা আবেদীন বলেন, আমার প্রকৃতি প্রেমী বাবা এশিয়ার সর্ববৃহৎ এ শিমুল বাগানটি তিনি নিজ হাতে গড়ে গেলেও তার সৌন্দর্য্য তিনি উপভোগ করতে পারেননি। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি আমার বাবা যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই বাগান তৈরি করেছিলেন তা সফল করতে। বিশেষ করে পর্যটকরা যেন এখানে এসে হাসি খুশি থাকতে পারেন এবং শহরের জীবনের ব্যস্ততা থেকে নিজেকে কয়েক মুহূর্তের জন্য দূরে রাখতে পারেন সেজন্য আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি।