ইতালিতে করোনায় একদিনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যকের মৃত্যু, বিশ্বে মৃতের সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়ালো
করোনাভাইরাসে ইতালিতে রোববার সবচেয়ে বেশি সংখ্যক লোক মারা গেছে।
দেশটিতে একদিনে ৩৬৮ জনের মৃত্যুতে এ সংখ্যা ১ হাজার ৮০৯-এ পৌঁছেছে। চীনের বাইরে যতোজন মারা গেছে এ সংখ্যা তার অর্ধেকেরও বেশি।
এদিকে সারাবিশ্বে এখন এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর ফলে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো তাদের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরো জোরদার করেছে।
ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় নেতারা হাসপাতালে বিছানা ও কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের স্বল্পতার ব্যাপারে সতর্ক করেছে। এছাড়া ভাটিকান ইস্টার উইক পালন থেকে বিরত থাকার কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ফ্রান্স ও স্পেনের চারদিকের ইউরোপীয় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাসমূহের ক্যাফে, দোকান ও রেস্তোরাঁসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
ফ্রান্স সকল অপ্রয়োজনীয় বাণিজ্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। স্পেন পুনরায় চিকিৎসা ও খাদ্য কেনার প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ করেছে।
জার্মানীতে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ এবং ডেনমার্কের সঙ্গে সীমান্ত সোমবার থেকে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে ইউরোপের সেনঝেন বহির্ভূত এলাকায় চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডকে নিষেধাজ্ঞায় যুক্ত করেছে।
নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে বিমানবন্দরগুলো বিড়ম্বনায় পড়েছে। অনুপ্রবেশের বিভিন্ন নতুন বিধিনিষেধ ও মেডিকেল স্ক্রিনিং এর শর্তাবলী নিয়ে যাত্রিদের নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে স্টাফদের।
এদিকে ব্রাজিল প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধিদের সংস্পর্শে আসার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করোনা পরীক্ষায় দেখা গেছে তিনি ভাইরাস মুক্ত আছেন।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন নুচিন রোববার বলেছেন, করোনাভাইরাসের ক্ষতিকর প্রভাব আমেরিকার অর্থনীতির গতি স্তিমিত করছে, তবে পুরোপুরি মন্দার আশঙ্কা নেই বলে তিনি মনে করছেন।
চীন আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। দেশটিতে নতুন আক্রান্তের প্রত্যেকেই বহিরাগত হওয়ায় সেখানে যে কোনো অনুপ্রবেশকারিকে কোয়ারেনন্টাইনে রাখা হচ্ছে।
চীনে গত ডিসেম্বরে ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব দেখা দেয়ার পর সেখানে বর্তমানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৮৪৪ জন, এদের মধ্যে ৩ হাজার ১৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৬৬ হাজার ৯১১ জন আরোগ্য লাভ করেছে।
চীন এবং ইতালির পর করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ইরানে। সেখানে মৃতের সংখ্যা এখন ৭২৪ জনে পৌঁছেছে।
যুক্তরাজ্য স্থানীয় নির্বাচন বাতিল করেছে। এ ভাইরাস ইউরোপীয় দেশগুলিকে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত করছে।
এদিকে ফ্রান্সে সরকারিভাবে অপ্রয়োজনীয় বাণিজ্য ও দূরে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও রোববার পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়া রোববার পাঁচজনের বেশি লোক একত্রিত হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং নাগরিকদের নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাড়িতে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।
এএফপি’র এক পরিসংখ্যান অনুযায়ি, বর্তমানে বিশ্বে ১৪১ টি দেশে নোভেল করনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা মোট ১ লাখ ৬৩ হাজার ৯৩০ জন এবং মৃতের সংখ্যা ৬ হাজার ৪২০ জন। এ ভাইরাসে ইউরোপে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।