করোনার উত্পত্তিস্থল উহান থেকে লকডাউন প্রত্যাহার
চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে তিয়ানহি বিমানবন্দর পুনরায় খুলে দেওয়ার পর গতকাল বহু যাত্রীকে হেঁটে যেতে দেখা যায়। দুই মাস পর গতকাল উহান থেকে লকডাউন প্রত্যাহার করা হয়েছে ।—এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসি
করোনা ভাইরাসের মহামারি প্রথম চীনের যে শহরে শুরু হয়েছিল, সেই উহান থেকে লকডাউন প্রত্যাহার করা হয়েছে। দুই মাস লকডাউনে থাকার পর বুধবার প্রথমবারের মতো লোকজনকে শহর ছাড়ার অনুমতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে চীনের ?মূল ভূখণ্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ফের কিছুটা বাড়ায় সংক্রমণের আরেকটি প্রবাহ শুরু হতে পারে, এমন আশঙ্কায় শুধু সুস্থ লোকজনকেই শহর ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
চীনের অন্যান্য অংশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতে জানুয়ারির শেষ দিকে ১ কোটি ১০ লাখ বাসিন্দার শহরটি অবরুদ্ধ করে চীন। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উহানের ৫০ হাজারেরও বেশি লোক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল এবং এতে আড়াই হাজারেরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়। সম্প্রতি নতুন আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে আসায় আরোপ করা কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা শুরু হয়। হুবেই প্রদেশের এই রাজধানী শহরে গত ২১ দিনে নতুন নিশ্চিত সংক্রমণের মাত্র তিনটি ঘটনা ঘটেছে।
উহানের তিয়ানহে বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু হওয়ার পর ১০ হাজারেরও বেশি ভ্রমণকারী শহরটি ছেড়েছেন। শিয়াংজিয়াং শহরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে উহানের হানকৌ রেল স্টেশনে সুটকেস নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পরিযায়ী শ্রমিক লিউ শিয়াওমিন বলেন, ‘আজ আমি বাড়িতে যাচ্ছি, আমি খুব খুশি।’ তবে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া উহানের বাসিন্দাদের তাদের আবাসিক এলাকা, শহর ও এমনকি প্রদেশও না ছাড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। উহান থেকে বেইজিংয়ে যাওয়া লোকজনকে দুই রাউন্ড ভাইরাস পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। কোনো ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পায়নি, এমন ভাইরাস বাহক ও বিদেশ থেকে আসা সংক্রমিতদের মাধ্যমে কোনো সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়ে যায় কি না, এমন উদ্বেগ থেকে কঠোর স্ক্রিনিং প্রটোকল মেনে চলছে চীন। লক্ষণ প্রকাশ হয়নি, এমন আক্রান্ত ও বিদেশফেরত আক্রান্তরাই এখন চীনের প্রধান উদ্বেগের বিষয়।
এদিকে উহানে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হওয়া শুরু করলেও চীনের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত-প্রদেশ হেইলংজিয়াংয়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে। সেখানে মঙ্গলবার ২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এমন অবস্থায় সুইফেনহি শহরে উহানের মতো নাগরিকদের চলাচলে বিধিনিষেধ ঘোষণা করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেখানকার এক বাসিন্দা প্রশ্ন করেছেন, সুইফেনহি একটি ছোটো শহর যেখানে কোনো আধুনিক হাসপাতাল নেই। এভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে এই শহরটি কীভাবে তা মোকাবিলা করবে।