করোনার ভয়ে মানুষকে না খাইয়েতো মারতে পারি না-শেখ হাসিনা
মোহাম্মদ হাসানঃ প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে উচ্চহারে সংক্রমিত এলাকাগুলোতে লকডাউনের পাশাপাশি কারো যেন খাবারের অভাব না হয় সেজন্য অর্থনীতির চাকাকেও সচল করার উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাস আতঙ্ককটা এখন এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যেটা খুব দুঃখজনক। তবু, আমরা ঠিক করেছি কোন কোন এলাকায় বেশি (করোনা সংক্রমণ) দেখা যাচ্ছে সেটা লকডাউন করা। আমরা সেটা আটকাচ্ছি যাতে সেখান থেকে আর কোনভাবে সংক্রমিত না হয়।’
তিনি আরো বলেন,‘সাথে সাথে আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডগুলো যেন সচল থাকে সেদিকেও আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি এবং আমরা একটা বাজেটও দিতে সক্ষম হয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আজ দুপুরে একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টম (বাজেট) অধিবেশনে সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, এমপি এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ’র মৃত্যুতে জাতীয় সংসদে গৃহীত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় একথা বলেন।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় স্পিকারের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মানুষগুলোকে তো আমরা করোনার ভয়ে না খাইয়েতো মারতে পারি না। তাঁদের বেঁচে থাকার ব্যবস্থাতো আমাদের নিতে হবে। তাঁদের জীবনযাত্রাটা যেন চলে সে ব্যবস্থাটাতো আমাদের করতে হবে।’
করোনা ভাইরাসকে অত্যন্ত শক্তিশালী আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, পশ্চিমা উন্নত দেশগুলোতে এই রোগের যে ধরন দেখেছেন তাতে এই রোগের সংক্রমণ এবং মৃত্যুহার ক্রমেই বেড়ে গিয়ে একটি পর্যায়ে গিয়ে থামে। বর্তমানে যে ওয়েভটি দক্ষিণ এশিয়া তথা বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে চলছে।
যে কারণে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে তাঁর সরকার, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি জনগণকে বোঝাতে যে, আপনারা অন্তত একটু স্বাস্থ্যবিধিটা মেনে চলেন। কারণ, এটা খুব সাংঘাতিক একটা সংক্রামক ব্যাধি। কাজেই, সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করেন।’
প্রধানমন্ত্রী বর্তমান পরিস্থিতিকে যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা কওে এই সময়ে তাঁর দু’জন সারথীর বিয়োগকে অত্যন্ত দুঃখজনক আখ্যায়িত করেন। তাঁদের বিভিন্ন অবদানের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠ বারবার বাষ্পরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, এটাও এক ধরনের একটা যুদ্ধ আর সেই সময় আমার দুইজন সহকর্মী যাদেরকে সবসময় পাশে পেয়েছি প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে পেয়েছি, তাঁদেরকে হারানো অত্যন্ত কষ্টদায়ক।’
‘আমি মোহাম্মদ নাসিম এবং শেখ মো. আব্দুল্লাহর রুহের মাগফিরাত কামনা করে তাঁদের শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা জানাচ্ছি,’ বলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘তাঁদের পরিবারের সদস্যদের শুধু এটুকুই বলবো যে, ধৈয্য ধরতে হবে। কারণ, স্বজন হারাবার বেদনাটা যে কি সেটাতো আমি জানি।’
তিনি বলেন, ‘সবাইকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ‘সবর’ দান করুন, আর আমাদের ছেড়ে যাঁরা চলে গেছেন তাঁদের বেহেস্ত নসিব করুন, সেই কামনাই করি।’