দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে গেলেও কমেছে নমুনা পরীক্ষা
মোহাম্মদ হাসানঃ বিশ্বব্যাপী চলছে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটির তাণ্ডবে অসহায় হয়ে পড়েছে সারাবিশ্বের সাথে বাংলাদেশও। প্রতিদিন দেশব্যাপী আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে চলছে যদিও নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার সংখ্যা কমেছে।
আজ ৫ জুলাই রবিবার দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর মহাখালিস্থ স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিদিনের মতো অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ নাসিমা সুলতানা।
ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে ৭৩ টি পরীক্ষাগারের মধ্যে ৬৮ টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ হাজার ৯৬৪ টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৩ হাজার ৯৮৮ টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৮ লাখ ৪৬ হাজার ৬২ টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও ২ হাজার ৭৩৮ জনের মধ্যে। ফলে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৬২ হাজার ৪১৭ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৫৫ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো দুই হাজার ৫২ জনের পাশাপাশি গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও ১৯০৪ জন মোট ৭২ হাজার ৬২৫ জন।
বুলেটিনে ডা. নাসিমা আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯.৫৭ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৪.৭২ শতাংশ, মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৬শতাংশ। আজ মৃতদের লিঙ্গ বিভাজনে পুরুষ ৩৭ নারী ১৮ জন।
এদিকে আজ রবিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বিশ্বে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ১৩ লাখ ৮২ হাজার ৮৯০ জন ছাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৪৭৩ জনের। যা আক্রান্তের ৪.৬৩%। ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৩ জন। যা আক্রান্তের ৫৬.৫৮%।
বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে সংক্রমণ ছড়িয়েছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। করোনার তথ্য প্রকাশকারী ওয়েবসাইট কভিডভিজ্যুয়ালাইজার থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
অপরদিকে করোনার ওষুধ হাইড্রোক্সোক্লোরোকুইন, লোপিনাভির ও রিটোনাভিরের ক্লিনিকাল ট্রায়াল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের তেমন কোন উন্নতির লক্ষণ না পাওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)।
তবে সংস্থাটি বলছে এ সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রে। তবে অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রে এসব ওষুধের ব্যবহার আগের মতই থাকবে। গেল মার্চ থেকে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের হাইড্রোক্সেক্লোরোকু্ন দেওয়া শুরু হয়। করোনা রোগীদের মূলত হাসপাতালে এই ওষুধের পাঁচটি ট্রায়াল দেওয়া হয়েছিল।
হাইড্রোক্সোক্লোরোকুইন মূলত আর্থাইটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় আর লোপিনাভির , রিটোনাভির এইচআইভির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই অন্তর্বর্তীকালীন পরীক্ষার ফলাফলগুলি দেখায় যে হাইড্রোক্সাক্লোরোকুইন এবং লোপিনাভির / রিটোনাভির মানের তুলনায় হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীদের মৃত্যুর পরিমাণ কমাতে সামান্যতম ভূমিকা রাখছে।
প্রসঙ্গত,গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৩ টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কভিড-১৯। গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।