দেশে করোনায় একদিনে আড়ও ৪৪ মৃত্যু ৩২০১শনাক্ত ৩৫২৪ সুস্থ
মোহাম্মদ হাসানঃ বৈশ্বিক মহামারী করোনার ভয়াবহতা রুখতে এখনও আলোর মুখ দেখেনি যেমনটি বিশ্ব, তেমনটি বাংলাদেশ। ফলে প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ নতুন করে করোনার শিকার হচ্ছেন। বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল, বাড়ছে সাধারণ নাগরিকদের মানসিক চাপ।তবে আশাজাগানিয়া বিষয় হলো প্রতিদিনই এই মরণঘ্যাতি ভাইরাসের সাথে লড়ে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরছেন হাজারো মানুষ।
আজ ৬ জুলাই সোমবার অপরাহ্নে রাজধানীর মহাখালিস্থ স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিদিনের মতো অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ নাসিমা সুলতানা।
ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে ৭৩ টি পরীক্ষাগারের মধ্যে ৬৮ টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ হাজার ২০১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৪ হাজার ২৪৫ টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৮ লাখ ৬০ হাজার ৩০৭ টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও ৩ হাজার ২০১ জনের মধ্যে। ফলে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬১৮ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪৪ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো দুই হাজার ৯৬ জনের পাশাপাশি গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও ৩৫২৪ জন মোট ৭৬ হাজার ১৪৯জন।
বুলেটিনে ডা. নাসিমা আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২২.৪৭ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৫.৯৮ শতাংশ, মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৭ শতাংশ। আজ মৃতদের লিঙ্গ বিভাজনে পুরুষ ৩৩ নারী ১১ জন।
এদিকে আজ সোমবার দুপর ১ঃ৩০ ঘটিকা পর্যন্ত বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত হয়েছে বিশ্বের ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৯৯ জন মানুষ। এতে করে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে ১ কোটি ১৫ লাখ ৭২ হাজার ১১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রাণ গেছে আরও ৩ হাজার ৫৭২ জনের। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ ৩৭ হাজার ০৪৭ জনে ঠেকেছে। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরছেন ৬৫ লাখ ৪৩ হাজার ৫২ জন
এর মধ্যে আজ সকাল পর্যন্ত শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই আক্রান্তের সংখ্যা ২৯ লাখ ৮২ হাজার ৯২৮ জনে দাঁড়িয়েছে। না ফেরার দেশে ১ লাখ ৩২ হাজার ৫৬৯ জন মানুষ।
ব্রাজিলে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ লাখ ৪ হাজার ৫৮৫ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রাণহানি ৬৪ হাজার ৯০০ জনে ঠেকেছে।
সংক্রমণের হারে রাশিয়াকে ছাড়িয়ে গেছে দক্ষিণ এশিয়ার ভারত। এখন পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখের কাছাকাছি। প্রাণহানি ১৯ হাজার ৭শ জনে দাঁড়িয়েছে।
আক্রান্তের তালিকায় চারে থাকা রাশিয়ায় সংক্রমিতের সংখ্যা ৬ লাখ ৮১ হাজারের বেশি। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ১৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়।
লাতিন আমেরিকার আরেক দেশ পেরুতেও নাজুক অবস্থা। দেশটিতে প্রাণহানি ততটা বেশি না হলেও সংক্রমণ দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় আক্রান্ত ৩ লাখ ছাড়িয়েছে। যেখানে মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজার ৫৮৯ জনের।
এ অঞ্চলের আরেক ভুক্তভোগী চিলিতে ২ লাখ সাড়ে ৯৫ হাজারের বেশি আক্রান্তে প্রাণ গেছে ৬ হাজার ৩০৮ জনের।
নিয়ন্ত্রণে আসা স্পেনে দ্বিতীয় দিনের ন্যায় গত একদিনেও আক্রান্ত ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। ইতিমধ্যে সেখানে আক্রান্ত ২ লাখ ৯৭ হাজার ৬২৫ জন মানুষ। ইউরোপের দেশটিতে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ৩৮৫ জনের।
যুক্তরাজ্যে প্রায় ২ লাখ ৮৫ হাজার ৪১৬ জনের আক্রান্তে মৃতের সংখ্যা ৪৪ হাজার ২২০ জনে ঠেকেছে।
লাতিন আমেরিকার ব্রাজিলের পরিই সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থায় থাকা মেক্সিকোয় আক্রান্ত ২ লাখ ৫৭ হাজার ছুঁই ছুঁই। প্রাণ গেছে ৩০ হাজার ৬৩৯ জনের।
ইউরোপে প্রথম আঘাত হানা ইতালিতে ২ লাখ ৪১ হাজার ৬১১ জন মানুষ করোনার শিকার। এর মধ্যে পৃথিবী ছেড়েছেন ৩৪ হাজার ৮৬১ জন।
ইরানে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২ লাখ ৪০ হাজারের বেশি। প্রাণহানি ঘটেছে ১১ হাজার ৫৭১ জনের।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশ পাকিস্তানে করোনার শিকার ২ লাখ ২৮ হাজারের অধিক। মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৭১২ জনের।
সংক্রমিতের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়েছে সবচেয়ে মুসলিম প্রধান দেশ সৌদি আরবে। এখন পর্যন্ত সেখানে করোনা রোগীর সংখ্যা ২ লাখ সাড়ে ৯ হাজারের বেশি। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৯১৬ জন।
তুরস্কে করোনার ভুক্তভোগী ২ লাখ প্রায় ৬ হাজার। যেখানে প্রাণহানি ঘটেছে ৫ হাজার ২২৫ জনের।
প্রসঙ্গত,গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে উৎপত্তি হওয়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।