চট্টগ্রামে আলোচিত এইট মার্ডার এর ২০ তম বার্ষিকী
চট্টগ্রামে আলোচিত এইট মার্ডারের ২০তম বার্ষিকী আজ। ২০০০ সালের ১২ জুলাই চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাটের কাছে প্রকাশ্যে ব্রাশফায়ারে ছাত্রলীগের আট নেতা-কর্মী নিহত হয়।
ওই দিন চট্টগ্রাম গর্ভমেন্ট কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউটের সাবেক ভিপি ও সাবেক এজিএসসহ আট নেতা-কর্মী দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য যাওয়ার পথে বহদ্দারহাটের কাছে তাদের মাইক্রোবাস থামিয়ে দিবালোকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হয়। হত্যার জন্য ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। আজ রবিবার চট্টগ্রামের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও নগর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নিহতদের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
এ ঘটনায় সেই সময় সারা দেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। এটি ‘এইট মার্ডার’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এর বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নামে ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন।
চট্টগ্রামের শেরশাহ পলিটেকনিক এলাকা থেকে মাইক্রোবাসে করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে অংশ নিতে বাকলিয়াস্থ সরকারি কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউটে যাচ্ছিলেন। গাড়িটি বহদ্দারহাট পুকুরপাড় এলাকায় আসলে আরেকটি মাইক্রোবাস তাদের সামনে এসে গতিরোধ করে। গতিরোধ করার মুহূর্তের মধ্যে ব্রাশফায়ার শুরু করা হয়। গাড়ির ভেতরে লুটিয়ে পড়েন ছাত্রলীগের ছয় নেতা, তাদের মাইক্রোবাসের চালক ও একজন অটোরিকশার চালক।
এই ঘটনায় নিহতরা হলেন সরকারি কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউট (পলিটেকনিক এলাকাস্থ) ছাত্র সংসদের তৎকালীন ভিপি হাসিবুর রহমান হেলাল, এজিএস রফিকুল ইসলাম সোহাগ, ইনস্টিটিউটের ছাত্র জাহাঙ্গীর হোসেন, বায়েজিদ বোস্তামী ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, শেরশাহ কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আবুল কাশেম, জাহিদ হোসেন এরশাদ, মাইক্রোবাস চালক মনু মিয়া এবং অটোরিকশা চালক কাশেম।
এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় আসামি করা হয় ২২ জনকে। বিচার চলাকালে দুইজন আসামি মারা যায়। ঘটনার আট বছর পর ২০০৮ সালের ২৭ মার্চ মামলার রায় দেন চট্টগ্রামের দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ একরামুল হক চৌধুরী। রায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রায়ে শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ হোসেন খান, মো. আলমগীর কবির ওরফে বাইট্টা আলমগীর, মো. আজম ও মো. সোলায়মানকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। শিবির ক্যাডার হাবিব খান, এনামুল হক ও আবদুল কাইয়ুমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
যাবজ্জীবন পাওয়া আসামিরা এখনো পলাতক। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিদের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন খান ভারতের কারাগারে, অন্য তিনজন দেশের কারাগারে বন্দি রয়েছে। মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন চার আসামি। একইসঙ্গে ফাঁসির রায় অনুমোদনের জন্য তা ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে। এই মামলায় ২০১৪ সালের এপ্রিলে আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. আব্দুল হাই ও বিচারপতি কৃষ্ণাদেব নাথের ডিভিশন বেঞ্চ চার আসামিকে খালাস দেন।